Site icon Parthokko.com.bd | পার্থক্য | Difference Between

অবরোহণ ও আরোহণের মধ্যে পার্থক্য

অবরোহণ ও আরোহণের

অবরোহণ (Degradation):

বিভিন্ন বহির্জাত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যখন ভূপৃষ্ঠস্থ উঁচু ভূমিভাগের উচ্চতা ক্রমশ হ্রাস পায় তখন তাকে অবরোহণ বা অবনয়ন বলে। অর্থাৎ যে সকল প্রক্রিয়ায় বাহ্যিক প্রাকৃতিক শক্তিসমূহ দ্বারা, যেমন- আবহবিকার, পুঞ্জিতক্ষয়, নদনদী, হিমবাহ, বায়ু প্রভৃতি ক্ষয়কাজের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের উঁচু স্থানগুলি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ধীরে ধীরে নিচু ভূমিতে পরিণত হয়, সেই প্রক্রিয়াসমূহকে অবরোহণ বলে । এই প্রক্রিয়ায় ভূমির উচ্চতার হ্রাস ঘটে ।

ক্ষয়সাধন ও নগ্নীভবন অবরোহণ প্রক্রিয়ার প্রধান মাধ্যম । অবরোহণের ফলেই সুউচ্চ পর্বত ক্ষয় হতে হতে প্রথমে ক্ষয়্জাত পর্বত ও তারপর ক্ষয়্জাত মালভূমি এবং শেষে ক্ষয়্জাত সমভূমিতে পরিণত হয় । এই প্রক্রিয়ায় জলপ্রপাত, মন্থকূপ, রসে মতানে, ইনসেলবার্জ প্রভৃতি ভূমিরূপ গড়ে ওঠে ।

আরোহণ (Agradation):

যে বহির্জাত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষয়জাত পদার্থ ভূপৃষ্ঠে নিচে অংশে সঞ্চিত হয় এবং উচ্চতা বৃদ্ধি করে, তাকে আরোহণ বলে। অর্থাৎ যে সকল প্রক্রিয়ায় বাহ্যিক প্রাকৃতিক শক্তিসমূহের, যেমন নদনদী, হিমবাহ, বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতির দ্বারা সঞ্চয়, অবক্ষেপণ ও অধঃক্ষেপণের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের নিম্নভূমিতে পলি, বালি, কাঁকর প্রভৃতি সঞ্চিত হয়ে নতুন ভূমি গড়ে ওঠে, সেই প্রক্রিয়াসমূহকে আরোহণ বলে । সঞ্চয়সাধন আরোহণ প্রক্রিয়ার প্রধান মাধ্যম । এই প্রক্রিয়ায় নিম্নভূমির উচ্চতা বৃদ্ধি পায় এবং প্লাবনভূমি, বদ্বীপ, ড্রামলিন, বালিয়াড়ি প্রভৃতি ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়।

অবরোহণ ও আরোহণের মধ্যে পার্থক্যঃ

বিভিন্ন বহির্জাত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যখন ভূপৃষ্ঠস্থ উঁচু ভূমিভাগের উচ্চতা ক্রমশ হ্রাস পায় তখন তাকে অবরোহণ। অবরোহণ ও আরোহণের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১. বিভিন্ন বহির্জাত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যখন ভূপৃষ্ঠস্থ উঁচু ভূমিভাগের উচ্চতা ক্রমশ হ্রাস পায় তখন তাকে অবরোহণ বা অবনয়ন বলে। অন্যদিকে, যে বহির্জাত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষয়জাত পদার্থ ভূপৃষ্ঠে নিচে অংশে সঞ্চিত হয় এবং উচ্চতা বৃদ্ধি করে, তাকে আরোহণ বলে।

২. বহির্জাত প্রক্রিয়াসমূহের দ্বারা ভূমিভাগের উচ্চতা হ্রাস ঘটানাের প্রক্রিয়া হল অবরােহণ। অন্যদিকে, নদীর ক্ষয়জাত ও পরিবাহিত সমস্ত পদার্থের পুঞ্জীভবন ও সঞ্চয় হল আরােহণ।

৩. অবরােহণ ঘটে থাকে নদীর খাড়া ঢালু অংশে। অন্যদিকে, আরােহণ ঘটে থাকে নদীর মৃদু ঢালু অংশে ও প্লাবনভূমিতে।

৪. অবরােহণের ফলে উত্তল ও অবতল ঢাল তৈরি হয়। অন্যদিকে, আরােহণের ফলে সমতলভূমি গঠিত হয়।

৫. অবরােহণের ফলে বিভিন্ন প্রকার ক্ষয়জাত ভূমিরূপ গঠিত হয়। অন্যদিকে, আরােহণের ফলে সয়জাত ভূমিরূপ যেমন- দ্বীপ, পলিগঠিত শঙ্কু, স্বাভাবিক বাঁধ, প্লাবনভূমি ইত্যাদি গঠিত হয়।

Exit mobile version