ব্যালন ডি’অর ও ফিফা বর্ষসেরার মধ্যে পার্থক্য

ব্যালন ডি’অর (Ballon d’Or):

ব্যালন ডি’অর বা মূল ফরাসি উচ্চারণে বালোঁ দর (ফরাসি: Ballon d’Or) একটি ফুটবল পুরস্কার যা প্রতি বছর ফরাসি ক্রীড়া সাময়িকী ফ্রঁস ফুটবল (France Football) প্রদান করে থাকে। এটি ব্যক্তিগত পর্যায়ে ফুটবল খেলোয়াড়দের জন্য সবচেয়ে প্রাচীন পুরস্কারগুলির মধ্যে অন্যতম। এটিকে সাধারণত ফুটবল খেলোয়াড়দের জন্য সবচেয়ে মর্যাদাবাহী পুরস্কার হিসেবে গণ্য করা হয়। পুরস্কারটি ১৯৫৬ সাল থেকে প্রদান করা শুরু হয়। তবে ২০১০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে বিশ্ব ফুটবল সংস্থা ফিফা-র সাথে একটি চুক্তি অনুযায়ী এটিকে ফিফা বিশ্বের বর্ষসেরা ফুটবলার পুরস্কারটির সাথে সাময়িকভাবে একীভূত করে দেওয়া হয় এবং একীভূত পুরস্কারটির নাম দেওয়া হয় ফিফা বালোঁ দর।

তবে এই অংশীদারিত্ব ২০১৬ সালে সমাপ্ত হবার পর থেকে পুরস্কারটির আবার “বালোঁ দর” নামে ফেরত যায়, এবং ফিফাও নিজস্ব পৃথক একটি পুরস্কারে ফেরত যায়, যার নাম ফিফা সেরা পুরুষ খেলোয়াড়। ফিফা বালোঁ দর বিজয়ীদেরকে ফিফা ও ফ্রঁস ফুতবোল সাময়িকী উভয়েই বিজয়ী হিসেবে গণ্য করে থাকে।

ফিফা বিশ্বসেরা (FIFA Player of the Year):

ফিফা বিশ্বসেরা ফুটবলার ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফুটবলে দক্ষতা ও ক্রীড়ানৈপুণ্যতা প্রদর্শনের উপর ভিত্তি করে দেয়া একটি বাৎসরিক পুরস্কার। বিভিন্ন দেশের জাতীয় দলের কোচ এবং অধিনায়কের ভোটের ভিত্তিতে প্রতিবছর একজন পুরুষ এবং একজন মহিলা খেলোয়াড়কে এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়। একজন কোচের ৩টি ভোট থাকে যেগুলোর পয়েন্ট যথাক্রমে ৫, ৩ এবং ১। সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত খেলোয়াড় পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন।

পুরুষ বিভাগে পুরস্কারটি চালু হয় ১৯৯১ সালে। এ পর্যন্ত দেয়া ১৭টি পুরস্কারের মধ্যে ৮টি জিতে নিয়ে ব্রাজিলীয় খেলোয়াড়গণ সুস্পষ্ট আধিপত্য বজায় রেখেছেন। মহিলা বিভাগে পুরস্কার চালু হয় ২০০১ সালে।

ব্যালন ডি’অর ও ফিফা বর্ষসেরার মধ্যে পার্থক্যঃ

স্কুল-কলেজ জীবনে অনেক পার্থক্য লিখেছেন, গণতন্ত্রের সঙ্গে একনায়কতন্ত্র কিংবা পাতা ও কান্ড । পাশাপাশি দুটি টেবিল এঁকে দুটি বস্তুর পার্থক্য বোঝানোর সেই বিদ্যা আরেকবার একটু ব্যবহার করতে হচ্ছে, সেটাও আবার ফুটবলে! ২০১০ সাল থেকে ফিফা ব্যালন ডি’অর নামে একটি পুরস্কার দেওয়া হতো বর্ষসেরা ফুটবলারকে। কিন্তু সে পুরস্কারটি আবারও ভাগ হয়ে গেছে। ফ্রেঞ্চ ফুটবল দিচ্ছে ব্যালন ডি’অর, ফিফাও দিচ্ছে ‘দ্য বেস্ট ফিফা ফুটবল প্লেয়ার’। তো, দেখে নেওয়া যাক দুটি পুরস্কারের মধ্যে পার্থক্য কী?

১। ব্যালন ডি’অর বা মূল ফরাসি উচ্চারণে বালোঁ দর (ফরাসি: Ballon d’Or) একটি ফুটবল পুরস্কার যা প্রতি বছর ফরাসি ক্রীড়া সাময়িকী ফ্রঁস ফুটবল (France Football) প্রদান করে থাকে। অন্যদিকে, ফিফা বিশ্বসেরা ফুটবলার ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফুটবলে দক্ষতা ও ক্রীড়ানৈপুণ্যতা প্রদর্শনের উপর ভিত্তি করে দেয়া একটি বাৎসরিক পুরস্কার।

২। প্রথম পার্থক্যটা ভৌগোলিক। ফিফার পুরস্কারটি বিশ্বজুড়ে হলেও ব্যালন ডি’অর দেওয়া হবে শুধু ইউরোপের সেরা খেলোয়াড়কে। অন্যদিকে, ইউরোপিয়ান ফুটবলে না খেলে এখনো পর্যন্ত ফিফার বর্ষসেরা কেউ হতে পারেননি।

৩। মনোনীত খেলোয়াড় সংখ্যায় ব্যালন ডি’অর পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান পেয়েছেন ৩০ জন। অন্যদিকে, ফিফার তালিকায় এসেছেন মাত্র ২৩ জন। এঁদের মধ্যে তিনজন—অ্যালেক্সিজ সানচেজ, মেসুত ওজিল ও এনগোলো কান্তে নেই ব্যালন ডি’অরে। আর ফিফার সেরার দৌড়ে না থাকা ১০ জন আছেন ব্যালন ডি’অর তালিকায়।

৪। ফ্রেঞ্চ ফুটবল নিজেদের পছন্দের পদ্ধতিতেই আবার ফিরেছে। মূলত সাংবাদিকদের ভোটেই নির্বাচিত হবেন এবারের ব্যালন ডি’অর। কিন্তু বর্ষসেরা পুরস্কারের জন্য একদম গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এগোচ্ছে ফিফা। এবার ভোটাভুটির নিয়মটা এমন, একজন খেলোয়াড়ের পয়েন্ট নির্ধারিত হবে চারটি গ্রুপের ভোটের ভিত্তিতে। ফিফার সদস্যদেশগুলোর অধিনায়ক, কোচ, ফিফা নির্ধারিত ২০০ মিডিয়া আর সমর্থকেরা। সবার ভোটের ভাগ সমান ২৫ শতাংশ।