Blogging এবং YouTube এর মধ্যে পার্থক্য

ব্লগিং (Blogging):

ব্লগিং হল এক ধরনের অনলাইন ব্যক্তিগত দিনলিপি বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক পত্রিকা। ব্লগ শব্দটি ওয়েবব্লগের সংক্ষিপ্ত রূপ। যিনি ব্লগে পোস্ট করেন তাকে ব্লগার বলা হয়। ব্লগাররা প্রতিনিয়ত তাদের ওয়েবসাইটে কনটেন্ট যুক্ত করেন আর ব্যবহারকারীরা সেখানে তাদের মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও সাম্প্রতিক কালে ব্লগ ফ্রিলান্স সাংবাদিকতার একটা মাধ্যম হয়ে উঠছে। সাম্প্রতিক ঘটনাসমূহ নিয়ে এক বা একাধিক ব্লগাররা তাদের ব্লগ হালনাগাদ করেন।

বেশিরভাগ ব্লগই কোন একটা নির্দিষ্ট বিষয়সম্পর্কিত ধারাবিবরণী বা খবর জানায়। বাকীগুলো ব্যক্তিগত অনলাইন দিনলীপি। একটি ব্লগ হলো লেখা, ছবি, অন্য ব্লগ, ওয়েব পৃষ্ঠা, এ বিষয়ের অন্য ওয়েব সাইটের লিংক ইত্যাদির সমাহার।

ইউটিউব (YouTube):

ইউটিউব হলো সান ব্রুনো, ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক একটি মার্কিন অনলাইন ভিডিও হোস্টিং সেবার সাইট, যা ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। ২০০৬ সালের অক্টোবরে, গুগল সাইটটিকে ১.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ক্রয় করে নেয়। ইউটিউব বর্তমানে গুগলের অন্যতম অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। ইউটিউব ব্যবহারকারীদের ভিত্তিমঞ্চে উঠানো ভিডিও দেখার সুযোগ প্রদানের পাশাপাশি মূল্যায়ন, ভাগাভাগি করে নেওয়া, চালনতালিকায় যুক্তকরণ, অভিযোগ প্রেরণ, ভিডিওতে মন্তব্য করা এবং অন্যান্য ব্যবহারকারীদের সম্প্রচারকেন্দ্রের গ্রাহক হবার সুবিধা প্রদান করে। এটি ব্যবহারকারী-উৎপাদিত এবং কর্পোরেট মিডিয়া ভিডিওর বিস্তৃত উপস্থাপন করে। উপলভ্য সামগ্রীর মধ্যে ভিডিও খণ্ড, টিভি অনুষ্ঠান খন্ড, সঙ্গীত ভিডিও, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং প্রামাণ্য চলচ্চিত্র, ধারণকৃত শ্রাব্য বা অডিও, ট্রেলার, সরাসরি প্রবাহ এবং ভিডিও ব্লগিং, স্বল্পদৈর্ঘ্য মূল ভিডিও এবং শিক্ষামূলক ভিডিওর মতো অন্যান্য সামগ্রী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

ইউটিউবে বেশিরভাগ সামগ্রী ব্যক্তিগতভাবে আপলোড করা হয়, তবে সিবিএস, বিবিসি, ভেভো, এবং হুলু সহ মিডিয়া কর্পোরেশনগুলো ইউটিউব অংশীদারিত্বের প্রোগ্রামের অংশ হিসাবে তাদের কিছু উপাদান ইউটিউবের মাধ্যমে সরবরাহ করে। অনিবন্ধিত ব্যবহারকারীরা কেবলমাত্র সাইটে ভিডিও দেখতে পারে, তবে উঠাতে বা আপলোড করতে পারে না। অন্যদিকে নিবন্ধিত ব্যবহারকারীদের সীমাহীন সংখ্যক ভিডিও আপলোড এবং ভিডিওগুলোতে মন্তব্য করার অনুমতি রয়েছে। বয়স-সীমাবদ্ধ ভিডিওগুলো কেবল নিবন্ধিত ব্যবহারকারীদের জন্যই নিজেকে কমপক্ষে ১৮ বছর বয়সের স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে দেখার অনুমোদন রয়েছে।

Blogging এবং YouTube এর মধ্যে পার্থক্যঃ

Blogging এবং YouTube এর মধ্যে কিছু মিল থাকার পাশাপাশি কিছু অমিলও রয়েছে। তাই নিচে Blogging এবং YouTube এর মধ্যে পার্থক্যসমূহ সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো-

১। প্রফেশনালি ব্লগিং করার জন্য অবশ্যই আপনাকে Domain and Hosting কিনে নিতে হবে। তবে পার্সোন্যালি ব্লগিং করতে চাইলে Google Blogspot দিয়ে সম্পূর্ণ ফ্রিতে ব্লগিং করতে পারবেন। অন্যদিকে, ভিডিও আপলোড করার জন্য YouTube কে কোন ধরনের টাকা পরিশোদ করতে হয় না। কারণ এখানে Domain and Hosting ক্রয় করার মত কোন ঝামেলা নেই। ভিডিও আপলোড করার জন্য ইউটিউব আনলিমিটেড স্টোরেজ ফ্রি দিয়ে থাকে।

২। একজন ব্লগার তার ইচ্ছামত আর্টিকেল, অডিও, ভিডিও এবং ছবি সহ বিভিন্ন রিসোর্স ব্লগে আপলোড করতে পারেন। অন্যদিকে, YouTube এ ভিডিও ব্যতীত অন্য কোন ধরনের রিসোর্স আপলোড করা যায় না।

৩। একটি ব্লগ স্বাধীনভাবে নিজের পছন্দমত ডিজাইন করা যায়। প্রয়োজনে বিভিন্ন প্লাগইন ব্যবহার করে ব্লগ অপটিমাইজ করা যায়। অন্যদিকে, ইউটিউবে কোন ধরনের ডিজাইন করা যায় না

৪। একটি Shelf Hosted ব্লগের মালিক আপনি নিজেই। ব্লগের পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আপনার হাতে থাকবে। অন্যদিকে, YouTube হচ্ছে গুগল হোস্টেড সেহেতু এটির পূর্ণ মালিকানা প্রতিষ্টা করা সম্ভব হয় না। YouTube এর নিয়ম ভঙ্গ করলে যেকোন সময় চ্যানেল সাসপেন্ড হতে পারে।

৫। ব্লগিং করে অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন ব্যবহার করা যায়। এমনকি একজন ব্লগার ক্লায়েন্ট কাছ বিজ্ঞাপন নিয়েও ব্লগে শো করাতে পারেন। অন্যদিকে, ব্লগের তুলনায় ইউটিউবে আয়ের উৎস খুবই কম।

৬। ব্লগ ম্যানেজ ও মেনটেইন করা কিছু জঠিল কাজ। ব্লগ ডিজাইন ও মেনটেইন সম্পর্কে মিনিমাম জ্ঞান না থাকলে ব্লগিং করা সম্ভব হয় না। অন্যদিকে, ভিডিও আপলোড করার জন্য খুব একটা জ্ঞানের প্রয়োজন না থাকলেও ভিডিও তৈরি এবং এ্যাডিটিং করার জন্য যথেষ্ট জ্ঞান রাখতে হবে।