বাটার এবং মার্জারিনের মধ্যে পার্থক্য

বাটার (Butter):

বাটার একটি দুগ্ধজাত বা দুধের পণ্য, যা সাধারণ দুধ বা দুধের প্রক্রিয়াজাত দুগ্ধ ক্রীম থেকে তৈরি করা হয়। এটি সাধারণত কোন খাবারে মেখে খাওয়া হয়। এছাড়া রান্না করতে যেমন, কিছু ভাঁজতে, সস তৈরিতে অথবা খাবারে বিশেষ সুঘ্রান আনতে বাটার ব্যবহৃত হয়। বাটারে চর্বি, পানি এবং দুগ্ধ প্রটিন থাকে।

বাটার সাধারণ গরুর দুধ দিয়ে তৈরি হয়। এছাড়া মাখন অন্য প্রাণী যেমন, ভেড়া, ছাগল, মহিষের দুধ দিয়েও তৈরি করা হয়। এতে কখনও কখনও লবণ, সুগন্ধি, প্রিজার্ভেটিবও ব্যবহার করা হয়। দুধ থেকে তৈরি ঘি, একটি বিশেষ ধরনের মাখন। মাখন দেখতে হলুদ রঙের তবে এটির রঙ গাঢ় হলুদ থেকে সাদা রঙের হতে পারে। এর রঙ নির্ভর করে দুধের উপর এবং ঐ প্রাণীর খাদ্যাভ্যাসের উপর। অনেক সময় প্রস্তুতকারীরাও রঙ মিশিয়ে থাকে।

মার্জারিন (Margarine):

মার্জারিন একটি অত্যন্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার যা মাখনের অনুকরণে তৈরি করা হয়। এটি উদ্ভিজ্জ তেল (পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট) থেকে তৈরি করা হয় এবং পেস্ট্রি এবং বেকড পণ্যগুলির একটি প্রধান উপাদান ছাড়াও এটি ভাজা, ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যও ব্যবহৃত হয়। ‘মার্জারিনে কোলেস্টেরল থাকে না কারণ এটি কোনও প্রাণীর পণ্য থেকে প্রাপ্ত নয়, তাই যারা তাদের কোলেস্টেরল দেখছেন তাদের ক্ষেত্রে মার্জারিনের পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে।

যদিও স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাটের কারণে মার্জারিনকে ভয় করা হয়, তবে এর স্বাস্থ্য উপকারিতাও রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, যেহেতু তাদের বেশিরভাগই অসম্পৃক্ত চর্বি, বিশেষত পলিআনস্যাচুরেটেড, তারা হৃদরোগের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত, বিশেষ করে যখন তারা স্যাচুরেটেড ফ্যাট প্রতিস্থাপন করে। একটি সমীক্ষা এমনকি দাবি করেছে যে এই ধরনের প্রতিস্থাপন হার্টের স্বাস্থ্য 17% কমিয়ে দেয়। এছাড়াও, যেহেতু মার্জারিন ফাইটোস্টেরল সহ উদ্ভিজ্জ তেল থেকে তৈরি হয়, তাই এটি শরীরের স্টেনল এবং স্টেরলের সংখ্যা বাড়ায়, যা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।

বাটার এবং মার্জারিনের মধ্যে মধ্যে পার্থক্যঃ

বাটার এবং মার্জারিন দুটি সাধারণ রান্নাঘরের নমুনা। যদিও মাখনে মূলত দুগ্ধজাত স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, মার্জারিন প্রধানত উদ্ভিজ্জ তেলের পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট দিয়ে তৈরি, যদিও তাদের মধ্যে ট্রান্স ফ্যাটও থাকতে পারে।

বাটার দুধ থেকে হয় আর মার্জারিন হচ্ছে কেমিকেল মিশ্রিত ভেজিটেবেল অয়েল । মার্জারিন দেখতে ঠিক বাটারেরই মত । সাধারণত মার্জারিন ভোজ্যতেল থেকে উত্পন্ন করা হয়। ভোজ্যতেলকে যখন বিশেষ রাসায়নিক উপায়ে জমাট করা হয়, তখন এটি ট্রান্স ফ্যাটে রূপান্তরিত হয়। এই ট্রান্স ফ্যাট রক্তে ক্ষতিকর এলডিএল কোলেস্টেরল বাড়ায় বলে প্রমাণিত হয়েছে। মার্জারিন, কেক, পেস্ট্রি ও বেকারির খাবারে এই উপায়ে ভোজ্যতেল ব্যবহূত হয়। এটি রক্তে চর্বির পরিমাণ বাড়ায় এবং ডায়াবেটিস, স্থূলতা ইত্যাদির ঝুঁকি বাড়ায়, সেই সাথে পরবর্তিতে হার্ট এটাক, স্ট্রোক সহ বহুবিধ রোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় ।

তাই মার্জারিন ক্ষতিকর নয় ভেবে বেশি খাওয়া যাবে না । বাটার থেকে এটাতে কম ফ্যাট থাকে কিন্তু মার্জারিন থেকে বাটারের পুষ্টি গুন বেশি। তাই ফ্যাট এড়াতে চাইলে বাটারের পরিবর্তে মার্জারিন শ্রেয় l বাটার রান্নার ক্ষেত্রে যে যে কাজে লাগে ঠিকই একই কাজে মার্জারিন লাগে l সকালের নাস্তায় ব্রেডের সাথে মার্জারিন দারুন লাগে খেতে l মনে রাখবেন মার্জারিন হলো বাটারের সাপ্লিমেন্ট ঠিক যেমন আমরা চিনির বদলে জিরো ক্যালরি সমৃদ্ধ সুক্রোজ খেয়ে থাকি l