রাজস্ব বাজেট ও মূলধনী বাজেটের মধ্যে পার্থক্য

রাজস্ব বাজেট:

দেশের প্রশাসনিক কাজকর্ম পরিচালনার জন্যে যে বাজেট গৃহীত হয় তাকে রাজস্ব বাজেট বলে। এ বাজেটে কেবল সরকারের রাজস্ব আয় এবং প্রশাসনিক ব্যয় দেখানো হয়। এ বাজেটে দুটি অংশ থাকে- আয়ের উৎস ও ব্যয়ের খাত। আয়ের অংশে সরকারের সম্ভাব্য মোট আয় উল্লেখ করা হয় এবং কোন কোন উৎস থেকে এ আয় আসবে তাও বর্ণনা করা হয়। একইভাবে, ব্যয়ের খাতে সরকারের সম্ভাব্য ব্যয়ের পরিমাণ এবং কোন কোন খাতে ব্যয় করা হবে তার উল্লেখ থাকে। রাজস্ব বাজেটের অর্থ সাধারণত প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, বেসরকারি প্রশাসন, শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা, জনস্বাস্থ্য, সামাজিক কল্যাণ প্রভৃতি খাতে ব্যয় করা হয়।

মূলধন বাজেট:

দেশের উন্নয়নমূলক কাজের জন্যে যে বাজেট করা হয় তাকে মূলধনী বাজেট বলে। এ বাজেটে সরকার কর্তৃক গৃহিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসুচির জন্য আয় ও ব্যয়ের হিসাব দেখানো হয়। যেমন, এক বছরে কৃষি, শিল্প, যোগাযোগ, পরিবহণ, বিদ্যুৎ ইত্যাদি খাতের উন্নয়নের জন্যে যে ব্যয় হবে তা এ বাজেটে দেখানো হয়। পাশাপাশি এ ব্যয় নির্বাহের জন্যে কোন কোন উৎস থেকে আয় সংগৃহিত হবে তাও এ বাজেটে উল্লেখ করা হয়। সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে মূলধন বাজেটে দেশের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য সম্ভাব্য ব্যয় ও প্রত্যাশিত আয়ের পরিমাণ দেখানো হয়। এ বাজেটের আয় প্রধানত রাজস্ব বাজেটের উদ্বৃত্ত এবং সরকারের অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি ঋণ ও অনুদানের মাধ্যমে সংগৃহিত হয়ে থাকে।

রাজস্ব বাজেট ও মূলধনী বাজেটের মধ্যে পার্থক্যঃ

১। মূলধন বাজেট ভবিষ্যতের নগদ প্রবাহ এবং প্রবাহের তুলনা করে বিনিয়োগের দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক সম্ভাবনাকে মূল্যায়ন করে। অন্যদিকে রাজস্ব বাজেট রাজস্বের একটি পূর্বাভাস যা কোম্পানির দ্বারা উৎপন্ন হবে।

২। মূলধনী বাজেটে প্রতিটি বিনিয়োগ প্রকল্পের জন্য বিভিন্ন মূলধন বাজেট প্রস্তুত করা হয়। অন্যদিকে রাজস্ব বাজেট একটি প্রধান বাজেট যা বাজেট প্রণয়নের একটি অংশ হিসাবে বছরের জন্য প্রস্তুত করা হয়।

৩। মূলধন বাজেট বিবেচনা করা উচিত এমন অনেকগুলি বিষয় অন্তর্ভুক্ত, এইভাবে প্রকৃতির জটিল। অন্যদিকে মূলধন বাজেটের তুলনায় রাজস্ব বাজেট কম জটিল।

৪। যেহেতু মূলধনের প্রকল্পগুলো তহবিলের উল্লেখযোগ্য পরিমাণের প্রয়োজন তাই ইক্যুইটি বা ঋণের মাধ্যমে অর্থায়ন করা হবে। অন্যদিকে রাজস্ব বাজেট সাধারণত এক বছরের সময়কালের জন্য তৈরি হয়, আর্থিক অ্যাকাউন্টিং বছরের আচ্ছাদন।

৫। রাজস্ব বাজেটের অর্থ সাধারণত প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, বেসরকারি প্রশাসন, শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা, জনস্বাস্থ্য, সামাজিক কল্যাণ প্রভৃতি খাতে ব্যয় করা হয়। অন্যদিকে মূলধনী বাজেট কৃষি, শিল্প, যোগাযোগ, পরিবহণ, বিদ্যুৎ ইত্যাদি খাতের উন্নয়নের জন্যে যে ব্যয় হবে তা এ বাজেটে দেখানো হয়।