সাংস্কৃতিক ভূগোল ও ভূগোল এর মধ্যে পার্থক্য

সাংস্কৃতিক ভূগোলঃ

সাংস্কৃতিক ভূগোল মানবীয় ভূগোলের একটি উপ-ক্ষেত্র। যদিও পৃথিবীর বিভিন্ন জাতির এবং সংস্কৃতির প্রথম ধাপটি টলেমি বা স্ট্রাবোর মতো প্রাচীন জ্যোতির্বিদদের থেকে লেখা হতে পারে, তবে ঐতিহ্যগত গবেষণায় সাংস্কৃতিক ভূগোলটি প্রথমটি বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকের পরিবেশগত নিয়ন্ত্রক তত্ত্বের বিকল্প হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। এই বিশ্বাস করা হয় যে মানুষ ও সমাজের পরিবেশে এটি বিকাশ সাধন করে।

পরিবেশগত শ্রেণীবিভাগগুলির উপর ভিত্তি করে পূর্বনির্ধারিত অঞ্চলগুলি অধ্যয়ন করার পরিবর্তে, সাংস্কৃতিক ভূগোল সাংস্কৃতিক পরিবেশে আগ্রহী হয়ে ওঠে। এতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখেন কার্ল ও. সয়ার (যাকে সাংস্কৃতিক ভূগোলের পিতা বলা হয়)। যিনি বার্কলে অবস্থিত ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। ফলস্বরূপ, সাংস্কৃতিক ভূগোল আমেরিকান লেখকদের দ্বারা দীর্ঘকাল আধিপত্য লাভ করে।

ভূগোলঃ

ভূগোল (Geography) যেটি এসেছে গ্রীক শব্দ geographia, থেকে যার শাব্দিক অর্থ পৃথিবী সম্পর্কিত বর্ণনা বা আলোচনা হচ্ছে বিজ্ঞানের সেই শাখা যেখানে পৃথিবীর ভূমি, এর গঠন বিন্যাস, এর অধিবাসী সম্পর্কিত সমস্ত প্রপঞ্চ সংক্রান্ত বিষয়াদি আলোচিত হয়।এই শব্দটি খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতকে গ্রিক জ্ঞানবেত্তা এরাটোসথেনিস (২৭৬–১৯৪ খ্রিস্টপূর্ব) প্রথম ব্যবহার করেন।ভূগোলে মানুষের বসবাসের জগৎ ও তার সাথে সম্পর্কিত সমস্ত বিষয় নিয়েই আলোচনা করা হয়ে থাকে।

উদাহরণস্বরূপঃ ভৌত ভূগোলে জলবায়ু, ভূমি ও জল নিয়ে গবেষণা করা হয়; সাংস্কৃতিক ভূগোলে কৃত্রিম, মনুষ্যনির্মিত ধারণা যেমন দেশ, বসতি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, পরিবহন, দালান, ও ভৌগোলিক পরিবেশের অন্যান্য পরিবর্তিত রূপ আলোচনা করা হয়। ভূগোলবিদেরা তাদের গবেষণায় অর্থনীতি, ইতিহাস, জীববিজ্ঞান, ভূতত্ত্ব এবং গণিতের সহায়তা নেন।

সাংস্কৃতিক ভূগোল ও ভূগোল এর মধ্যে পার্থক্যঃ

ভূগোল (Geography) যেটি এসেছে গ্রীক শব্দ geographia, থেকে যার শাব্দিক অর্থ পৃথিবী সম্পর্কিত বর্ণনা। সাংস্কৃতিক ভূগোল ও ভূগোল এর মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। ভূগোলের যে শাখায় পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের উৎপত্তি ,বিবর্তন ,ভাষা, আচার ব্যবহার প্রভৃতি আলোচনা করা হয় ,তাকে সাংস্কৃতিক ভূগোল বলে। অন্যদিকে পৃথিবীর অভ্যন্তর ও বহিঃজ্ঞ প্রক্রিয়া গুলো যে পুস্তকে আলোচনা করা হয় তাকে ভূগোল বলে।

২। সাংস্কৃতিক ভূগোলের পরিধি কব বেশি নয়। অন্যদিকে ভূগোলের পরিধি অনেক বেশী।

৩। সাংস্কৃতিক ভূগোল মানুষ ও মানুষের বিভিন্ন ধরনের সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা করে। অন্যদিকে ভূগোল পৃথিবী ও তার বিভিন্ন প্রক্রিয়া সমূহ নিয়ে আলোচনা করে।

৪। সাংস্কৃতিক ভূগোলের শাখা নেই। অন্যদিকে ভূগোলের প্রধান শাখা চারটি।

৫। উনবিংশ শতাব্দী থেকে সাংস্কৃতিক ভূগোলের ক্রমবিকাশ শুরু হয়। অন্যদিকে উনবিংশ শতাব্দী খ্রিস্টপূর্ব থেকে ভূগোলের ক্রমবিকাশ শুরু হয়।

৬। সাংস্কৃতিক ভূগোলের ইংরেজি প্রতিশব্দ Cultural Geography । অন্যদিকে ভূগোলের ইংরেজি প্রতিশব্দ Geography ।