চাহিদা রেখা ও সূচির মধ্যে পার্থক্য

চাহিদা সূচি (Demand Schedule)

অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত রেখে কোন ভোক্তা নির্দিষ্ট সময়ে বিভিন্ন দামে একটি দ্রব্যের যে পরিমাণ ক্রয় করে তার সংখ্যাত্নক প্রকাশ বা তালিকাকে চাহিদা সূচি (Demand Schedule) বলে। ভোক্তা সাধারণত: কম দামে একটি দ্রব্য বেশী পরিমাণে এবং বেশী দামে ঐ দ্রব্যটি কম পরিমাণে ক্রয় করে। অন্য কথায় আমরা বলতে পারি, চাহিদা সূচি হলো চাহিদা বিধির গাণিতিক প্রকাশ।

চালের দাম (টাকা প্রাত কেজি)চাহিদার পরিমান (কেজি)
২৮১০
২৬১৫
২৪২০
২২২৫

থেকে দেখা যায় যে, যখন প্রতি কেজি চালের দাম ২৮ টাকা তখন চালের চাহিদার পরিমাণ ১০ কেজি, দাম কমে যখন ২৬ টাকা হয়, তখন চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে ১৫ কেজি হয়েছে। চালের দাম আরো কমে যখন ২৪ টাকা হয় তখন চাহিদার পরিমাণ হলো ২০ কেজি এবং দাম যখন কমে ২২ টাকা হয় তখন চাহিদার পরিমাণ হলো ২৫ কেজি। এভাবে কোন ভোক্তা বা ক্রেতা বিভিন্ন দামে একটি দ্রব্যের যে পরিমাণ ক্রয় করে তার তালিকাকে চাহিদা সূচি বলে।

চাহিদা রেখা (Demand Curve)
চাহিদা সূচিকে যখন চিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তখন তাকে চাহিদা রেখা বলে । অন্যভাবে, কোনো দ্রব্যের চাহিদা সূচি থেকে মূল্য এবং চাহিদার বিভিন্ন সংমিশ্রণ (Combination) ছক কাগজে সন্নিবেশ করলে যে সব যুগ্মবিন্দু ((Cordinates) পাওয়া যায় সেগুলোকে যোগ করে একটি রেখা আঁকলে তাকে চাহিদা রেখা বলা হয়।

চাহিদা রেখা ও সুচির মধ্যে পার্থক্যঃ

১। দ্রব্যের মূল্য ও চাহিদার মধ্যকার বিপরীত সম্পর্ক যখন তালিকার মাধ্যমে দেখানো হয়, তাই চাহিদা সূচি। অন্যদকিে চাহিদা সূচি যখন রেখার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তাকে চাহিদা রেখা বলে ।

২। ভোক্তা বিভিন্ন দামে বিভিন্ন পরিমাণ দ্রব্য ক্রয় করতে ইচ্ছুক চাহিদা সূচি তাই প্রকাশ করে। অন্যদিকে, নির্দিষ্ট দামে
ভোক্তা দ্রব্যের কি পরিমাণ কিনতে ইচ্ছুক চাহিদা রেখা তাই প্রকাশ করে।

৩। চাহিদা সূচি গাণিতিকভাবে তালিকার মাধ্যমে দেখানো হয়। অন্যদিকে, চাহিদা রেখা জ্যামিতিকভাবে দেখানো হয়।

৪। চাহিদা সূচির একদিকে দ্রব্যের প্রতি এককের দাম এবং তদনুযায়ী দ্রব্যের কত একক ক্রয় করা হলো তা দেয়া থাকে। অন্যদিকে চাহিদা রেখার দু’টি অক্ষ (ধীরং) থাকে। একটি দামের অক্ষ এবং অপরটি চাহিদার পরিমাণের অক্ষ।