Site icon Parthokko.com.bd | পার্থক্য | Difference Between

গণতান্ত্রিক ও স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বের মধ্যে পার্থক্য

গণতান্ত্রিক ও স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব

গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব (Democratic leadership):
এক ধরনের সাধারণ তত্ত্বাবধান যেখানে ব্যবস্থাপক অধীনস্থদের সাথে কাজ-সংক্রান্ত বিষয়ে সলা-পরামর্শ করে তাকে গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব বলে। গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব হলো নেতৃত্বের একটি ধরন যেখানে দলের সদস্যরা সিদ্ধান্ত-গ্রহণ প্রক্রিয়ায় আরও বেশী অংশগ্রহণমূলক ভূমিকা পালন করে। গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব শৈলীতে দলের সিদ্ধান্ত-গ্রহণকেই পছন্দ করা হয়।

অর্থাৎ এই নেতা দলের সঙ্গে প্রথমে আলোচনা করে তার পর নির্দেশ দেন। তিনি দলের সহযোগিতা লাভ করতে পারেন এবং দলকে কার্যকরী ও ইতিবাচকভাবে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন। গণতান্ত্রিক নেতার সিদ্ধান্ত স্বৈরাচারী নেতার মতো একপেশে নয়, কারণ দলের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা ও তাদের অংশগ্রহণের মাধ্যমেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছনো হয়।

স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব (Autocratic leadership):
নেতা যখন অনুসারীদের সাথে স্বেচ্ছাচারমূলক আচরণ করেন তখন তার নেতৃত্বকে স্বেচ্ছাচারী নেতৃত্ব বলে। স্বেচ্ছাচারী নেতা ক্ষমতা নিজের হাতে কেন্দ্রীভূত করে রাখেন, সিদ্ধান্তগ্রহণে কর্মীদের অংশ নেওয়ার সুযোগ দেন না বরং নিজের সিদ্ধান্ত তাদের উপর চাপিয়ে দেন। নেতার ইচ্ছানুসারে কাজ না করা হলে কর্মীদের শাস্তির ভয় দেখান কিংবা চাকরিচ্যুত করেন। তবে এরূপ নেতৃত্বের প্রধান সুবিধা হল, এতে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়।

গণতান্ত্রিক ও স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বের মধ্যে পার্থক্যঃ

গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব সম্পূর্ণ বিপরীত ধর্মী প্রতিষ্ঠানের অধীনস্থদের সহযোগিতা উপর ভিত্তি করে গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত। গণতান্ত্রিক ও স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১. গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব সম্পূর্ণ বিপরীত ধর্মী প্রতিষ্ঠানের অধীনস্থদের সহযোগিতা উপর ভিত্তি করে গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত। অন্যদিকে, স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব নেতা নিজেকে সকল ক্ষমতার অধিকারী মনে করেন।

২. গণতান্ত্রিক নেতৃত্বে ক্ষমতার প্রয়ােগ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে অধস্তন কর্মীর অংশগ্রহণ উৎসাহিত করা হয়। অন্যদিকে, স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও ক্ষমতা প্রয়ােগে নেতা একনায়কসুলভ আচরণ করেন।

৩. স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব কার্য-ভিত্তিক যা কার্য সম্পাদন সফলভাবে আরও বেশি জোর দেয়। অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাটিক নেতৃত্ব সম্পর্ক ভিত্তিক, যার লক্ষ্য গ্রুপের সদস্যদের সাথে ক্ষমতা ভাগ করে উন্নত-অধস্তন সম্পর্কের উন্নতি করা।

৪. স্বৈরাচারী নেতৃত্বের ধারণাটি ম্যাকগ্রিগোরের তত্ত্ব এক্স থেকে অনুপ্রেরণার ভিত্তিতে উৎপন্ন। অন্যদিকে, গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব অনুপ্রেরণার বিষয়ে ম্যাকগ্রিগরের থিওরি ওয়াই থেকে ধারণা করা হয়।

৫. নিয়ন্ত্রণের উচ্চ স্তরের স্বৈরাচারী নেতৃত্বের উপস্থিতি রয়েছে। অন্যদিকে, গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের নিম্ন স্তরের নিয়ন্ত্রণ জড়িত।

৬. গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের মধ্যে চিন্তার মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং স্বাধীনতা রয়েছে যা স্বৈরাচারী নেতৃত্বের ক্ষেত্রে নয়।

৭. গণতান্ত্রিক নেতৃত্বে নেতা অধস্তনদের সাথে আলোচনা ও পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেন। অন্যদিকে, স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বে নেতা নিজের ক্ষমতা ও সামথ্যের ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেন।

৮. গণতান্ত্রিক নেতৃত্বে কর্মীকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা হয় এবং কর্মীর মতামতকে গুরুত্ব দেয়া হয়। অন্যদিকে, স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বে কর্মীদের মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা হয় না এবং তাদের মতামত গ্রাহ্য করা হয় না।

Exit mobile version