Site icon Parthokko.com.bd | পার্থক্য | Difference Between

পরিপাক ও বিপাকের মধ্যে পার্থক্য

পরিপাক ও বিপাকের

পরিপাক (Digestion):

যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় প্রাণীর ভুক্ত, অদ্রবণীয়, অশোষণীয়, জটিল খাদ্য নির্দিষ্ট উৎসেচকের প্রভাবে আর্দ্র-বিশ্লেষিত হয়ে দ্রবণীয়, শোষণীয়, সরল খাদ্যে পরিণত হয়, তাকে পরিপাক বলে। অন্যভাবে বলা যায় যে, জৈবরাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জটিল খাদ্যবস্তু উৎসেচকের সহায়তায় ভেঙে জীব দেহের বিপাকক্রিয়ার ব্যবহারযোগ্য সরল, দ্রবণীয় ও শোষণযোগ্য অবস্থায় পরিবর্তিত হয়, তাকে পরিপাক বলে। পরিপাকের দ্বারা খাদ্য বস্তু ভেঙ্গে ক্ষুদ্র অণুযুক্ত জলে দ্রবণীয় খাদ্য বস্তুতে পরিনত হয় এবং তরল আকারে রক্ত ও প্লাজার মধ্যে শোষিত হতে পারে। কিছু প্রাণীর মধ্যে, এই ক্ষুদ্র পদার্থগুলি ছোট ছোট অণুর আকারে রক্ত প্রবাহে শোষিত হয়।

পরিপাক একটি ভাঙ্গন মূলক পদ্ধতি যা প্রায়ই খাদ্যের ভাগাভাগির উপর ভিত্তি করে দুটি প্রক্রিয়াতে বিভক্ত হয়: যান্ত্রিক এবং রাসায়নিক পরিপাক। যান্ত্রিক পরিপাক হল বৃহৎ খাদ্য কণাকে ছোট আকারে খাদ্যের কণায় পরিণত করা যা পরবর্তীতে পাচক উৎসেচক দ্বারা অ্যাক্সেস করতে পারে। রাসায়নিক পরিপাক হল উৎসেচকের দ্বারা খাদ্য বস্তুকে ছোট অণুতে পরিণত করা এবং তা দেহে শোষিত হয়।

বিপাক (Metabolism):

কোন জীবের দেহে সংঘটিত সকল রাসায়নিক বিক্রিয়াকে একত্রে বিপাক এর ইংরেজি ইংরাজি প্রতিশব্দ Metabolism এবং গ্রীক μεταβολή metabol। জীবদেহের অভ্যন্তরে সংঘটিত সমস্ত রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলি এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্কিত শক্তির পরিবর্তনকে সামগ্রিকভাবে বিপাক বলে। বিপাকের প্রধান তিনটি অবস্থা হল-

(i) পুষ্টিদ্রব্য গ্রহণ
(ii) পুষ্টিদ্রব্য আত্তীকরণ এবং
(iii) বর্জ্যপদার্থ দূরীকরণ।

বিপাকে সংঘটিত ক্রিয়া-বিক্রিয়া বিপাকীয় পথ অনুসরণ করে যেখানে একটি কেমিক্যাল এনজাইমের সাহায্যে বিভিন্ন সিরিজের মাধ্যমে আরেকটি কেমিক্যালে রূপান্তরিত হয়। বিপাকের জন্য এনজাইম আবশ্যক। খুব দ্রুত বিক্রিয়া সংঘটনের পাশাপাশি কোষের পরিবেশ পরিবর্তিত কিংবা অন্য কোষ থেকে সংকেত পেলে এনজাইম বিপাকের পথও নিয়ন্ত্রণ করে ।

কোন জীবের বিপাকীয় পথ নির্ধারণ করে কোন উপাদানটিতে এটি পুষ্টি পাবে এবং কোনটি বিষাক্ত। উদাহরণস্বরূপ: কিছু প্রোক্যারিয়ট হাইড্রোজেন সালফাইডকে নিউট্রিয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করে যদিও এই গ্যাস প্রাণীর জন্যে ক্ষতিকর।[২] বিপাকের গতি, হার একটি জীব কতটুকু খাদ্যের প্রয়োজন তা নির্ধারণ করে।

পরিপাক ও বিপাকের মধ্যে পার্থক্য:

পরিপাক একটি ভাঙ্গন মূলক পদ্ধতি যা প্রায়ই খাদ্যের ভাগাভাগির উপর ভিত্তি করে দুটি প্রক্রিয়াতে বিভক্ত হয়। পরিপাক ও বিপাকের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। হলোজোয়িক পুষ্টির পরিপাক নামক সজীব কোষের প্রোটোপ্লাজমে গঠনমূলক বা ভাঙনমূলক জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলি সংগঠিত হয়। অন্যদিকে বিপাক পর্যায়ে জটিল খাদ্যবস্তু প্রধানত উৎসেচকের সাহায্যে ভেঙে সরল, তরল শোষণ যোগ্য খাদ্য রসে পরিণত হয়।

২। পরিপাক কোষের ভিতরে বা বাইরে ঘটতে পারে। অন্যদিকে বিপাক কেবলমাত্র সজীব কোষের ভিতরেই ঘটে।

৩। পরিপাকের সময় শক্তি নির্গত হয় না। অন্যদিকে বিপাকের সময় শক্তি নির্গত হতে পারে।

Exit mobile version