ডিস্ক এবং ড্রাম ব্রেকের মধ্যে পার্থক্য

ডিস্ক ব্রেক (Disc Brake):

ডিস্ক ব্রেক একটি ঘূর্ণমান ডিভাইস যা চাকার সঙ্গে বরাবর ঘোরে। ব্রেক প্যাডগুলি ডিস্কের উভয় পাশে উপস্থিত থাকে, যা ব্রেকটির বিরুদ্ধে চাপলে গাড়িটি বন্ধ হয়ে যায়। ডিস্ক ব্রেকের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় ডিস্ক ব্রেকে ছোট ছোট হোল দেয়া থাকে যেন ব্রেক গরম হলেও বাতাস চলাচল করতে পারে। কিন্তু ড্রাম ব্রেক গরম হলেও বাতাস চলাচল করতে পারে না। যেসব মোটরসাইকেলে ড্রাম ব্রেক চাপতে হয় সেই ব্রেক এ ঘর্ষন জনিত কারনে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয় ফলে বেশি শক্তি প্রয়োগ করা হয় মোটরসাইকেল কে থামানোর জন্য। ডিস্ক ব্রেকে যখন ব্রেক প্যাডেল প্রয়োগ করা হয় তখন ব্রেক তরল চাপ পিস্টনকে ডিস্কের বিপরীতে ব্রেক প্যাডগুলি চাপিয়ে দেয় ফলে শক্তির রূপান্তর ঘটে এবং গাড়ি থেমে যায়।

ড্রাম ব্রেক (Drum Brake):

ড্রাম ব্রেক সিস্টেম এর নাম শুনে মনে হচ্ছে এই ব্রেক সিস্টেম দেখতে অনেকটা ড্রামের মত হবে । এই ব্রেক সিস্টেম গাড়ির চাকার সাথে সাথে মুভ করে। ড্রাম ব্রেক সিস্টেম এর ২টি অংশ হচ্ছে ব্রেক প্যাডস এবং পিস্টন। যখন এই ব্রেক টি চেপে ধরা হয়ে থাকে তখন ব্রেক ফ্লুইড পিস্টন এর বিরুদ্ধে চাপ প্রয়োগ করে, যেন পিস্টন ব্রেক সো-কে স্পিনিং ড্রাম এর সাথে চেপে ধরে । এ জন্য একে ড্রাম ব্রেক বলা হয়।

ডিস্ক এবং ড্রাম ব্রেকের মধ্যে পার্থক্যঃ

মোটরসাইকেল থামানোর জন্য দুই ধরনের ব্রেক সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। এগুলো হলো ড্রিস ব্রেক ও ড্রাম ব্রেক। অনেক রাইডারের কাছেই ডিস্ক ব্রেক ও ড্রাম ব্রেক নিয়ে অনেক কনফিউশন রয়েছে। ডিস্ক ব্রেক বনাম ড্রাম ব্রেক এর পার্থক্য জানার আগে ব্রেক সিস্টেম সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা নেয়া যাক। ব্রেক হচ্ছে সেই ডিভাইস যা গতিশীল কোন বস্তুকে কে থামানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। ব্রেক আসলে এমন একটি ডিভাইস যা গতিশক্তিকে অন্য শক্তিতে রূপান্তর করে থাকে। নিচে ডিস্ক এবং ড্রাম ব্রেকের মধ্যে পার্থক্য ব্যাখ্যা করা হয়েছে-

ড্রাম ব্রেকের থেকে ডিস্ক ব্রেক অনেক বেশি কার্যকরী। ডিস্ক থাকে হুইল-এর বাইরে। ফলে খোলা হাওয়ায় তাড়াতাড়ি ঠাণ্ডা হতে পারে। আর তাই প্রয়োজনের সময় ডিস্ক ব্রেক অনেক বেশি কার্যকরী হয়। অন্যদিকে, ড্রাম ব্রেক থাকে হুইলের ভিতরে। তাই সহজে ঠাণ্ডা হয় না। ফলে অনেক সময়ই ড্রাম ব্রেক সময়মতো কাজ করে না। তবে ড্রাম ব্রেক তুলনায় অনেক বেশি মজবুত হয়। কারণ এতে কোটিং করা থাকে। ফলে ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা কম।

ড্রাম ব্রেকের রক্ষণাবেক্ষণে খরচ কিন্তু বেশি। কারণ এটি হুইলের ভিতর দিকে থাকে। একবার বিগড়ে গেলে সহজে ড্রাম ব্রেক মেরামত করা যায় না। ছোটখাটো গোলমাল দেখা দিলেও ড্রাম ব্রেক সারাতে মেকানিকের কাছে নিয়ে যেতে হয়। ডিস্ক ব্রেক তুলনায় দামি। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণে বেশি ঝামেলা নেই। হুইলের বাইরের দিকে থাকায় এই ব্রেক মেরামত করাটাও সহজ।

ভিজে রাস্তায় ড্রামের থেকে ডিস্ক ব্রেক অনেক বেশি কার্যকর। যদিও মোটরসাইকেলের গতি বেশি হলে কখনওই ডিস্ক ব্রেক প্রয়োগ করা উচিত নয়। সেক্ষেত্রে চাকা পিছলে বিপদ হতে পারে। তবে চাকা ভেজা থাকলে ড্রাম ব্রেক কার্যকর নাও হতে পারে। কারণ সেক্ষেত্রে ব্রেক থ্রু ও লাইনিং-এর মাঝে গ্রিপ ঠিকভাবে নাও হতে পারে। ফলে যে কোনও পরিস্থিতিতেই ডিস্ক ব্রেকের সঠিকভাবে কাজ করার সম্ভাবনা বেশি। তবে ডিস্ক ব্রেক ব্যবহারে বাড়তি সতর্ক থাকতে হয়। না হলে চাকা পিছলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।