এনজাইম ও কো-এনজাইমের মধ্যে পার্থক্য

এনজাইম:

উৎসেচক বা এনজাইম (enzyme) হচ্ছে এক প্রকার জৈব অনুঘটক (organic catalyst)। গঠনগতভাবে এটি প্রোটিন জাতীয় পদার্থ । জীবদেহে এমন কিছু প্রোটিন অণু সৃষ্টি হয় যার কাজ হলো দেহের জরুরি কিছু রাসায়নিক বিক্রিয়াকে দ্রুততর করা, এই অণুগুলোকে বলা হয় এনজাইম। ব্যতিক্রম রাইবোজাইম (ribozyme) এবং ডিএনএজাইম যেখানে যথাক্রমে আরএনএ ও ডিএনএ উৎসেচক (এনজাইম) হিসাবে কাজ করে।এনজাইম পরিপাকে, বিপাকে, স্নায়ু উদ্দীপনা পরিবহনে সাহায্য করে।

আন্তর্জাতিক প্রাণরাসায়ন ও অণু জীববিজ্ঞান সম্মিলনের (IUBMB) নামকরণ কমিটি উৎসেচকদের ছয়টি প্রধান ভাগে ভাগ করে ছটি ইসি নম্বর নির্দিষ্ট করেন ও প্রত্যক উৎসেচককে চারটি সংখ্যা দিয়ে সঠিক ভাবে চিহ্নিত করার প্রথা প্রচলন করে।

কো-এনজাইম:

এনজাইমের প্রোসথেটিক গ্রুপটি কোন জৈব রাসায়নিক পদার্থ হলে সেই এনজাইমই হলো কো-এনজাইম। যেমন- NAD, ATO ইত্যাদি কো-এনজাইম অংশ করে নিলে এনজাইমের কার্যক্ষমতা বহুলাংশে হ্রাস পায়।

এনজাইম ও কো-এনজাইমের মধ্যে পার্থক্য:

এনজাইমের প্রোসথেটিক গ্রুপটি কোন জৈব রাসায়নিক পদার্থ হলে সেই এনজাইমই হলো কো-এনজাইম। এনজাইম ও কো-এনজাইমের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। এনজাইম এক প্রকার প্রোটিন। অন্যদিকে কো-এনজাইম প্রোটিন নয়।

২। এনজাইম কো-এনজাইম ছাড়া কাজ করতে পারে না। অন্যদিকে কো-এনজাইম এনজাইম ছাড়া কাজ করতে পারে।

৩। ৫০হ্ন-৬০হ্ন তাপমাত্রায় এনজাইমের কার্যকারিতা থাকে। অন্যদিকে কো-এনজাইমের তাপমাত্রার সহনক্ষমতা খুব কম।

৪। সুনির্দিষ্ট বিক্রিয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট এনজাইম ক্রিয়াশীল হয়। অন্যদিকে একটি কো-এনজাইম একাধিক এনজাইম নিয়ে বিক্রিয়াই অংশ নিতে পারে।

৫। কো-এনজাইম ছাড়াও কোন কোন এনজাইম সক্রিয় থাকে। অন্যদিকে নির্দিষ্ট অ্যাপো এনজাইম (নিষ্ক্রিয় প্রোটিন অংশ ) ছাড়া স্বাধীন সক্রিয়তা নেই।

৬। এনজাইম সংশ্লেষণ সম্পূর্ণরুপে জিন নিয়ন্ত্রিত ;দেহেই সংশ্লেষিত হয়। অন্যদিকে কো-এনজাইমে সংশ্লেষণ জিন নিয়ন্ত্রিত নয়।

৭। এনজাইম ক্রিয়া তাপ ও pH দ্বারা প্রভাবিত। অন্যদিকে কো-এনজাইম ক্রিয়া তাপ ও pH দ্বারা প্রভাবিত নয়।