সামন্ততান্ত্রিক ও ধনতান্ত্রিক কৃষির মধ্যে পার্থক্য

সামন্ততান্ত্রিক কৃষি:

সামন্ততান্ত্রিক কৃষি হচ্ছে একটি মধ্যযুগীয় কৃষি পদ্ধতি, যেখানে জমিদার বা জমির মালিকানার দাবিতে সম্পূর্ণভাবে কৃষি পদ্ধতিকে নিয়ন্ত্রণ এবং
জমির মালিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে। ভূমির উপর মালিকানাসহ কৃষি পদ্ধতির পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত করাকে সামন্ততান্ত্রিক কৃষি পদ্ধতি বলা হয়।

ধনতান্ত্রিক কৃষি:

ধনতান্ত্রিক কৃষি ব্যক্তিগত উদ্যোক্তারা সর্বোচ্চ মুনাফা লাভের নিমিত্তে এক ধরণের কৃষি পদ্ধতির মূলতঃ প্রচলন এবং এতে ব্যক্তিগত স্বার্থটাই বড় এবং সামাজিক কল্যাণ গৌন। অর্থাৎ যে কৃষি পদ্ধতিতে ধনায়নের নিমিত্তে যে সব ফসল উৎপন্ন করা হয় তাই ধনতান্ত্রিক কৃষি পদ্ধতি। ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশে এ ধরণের কৃষি প্রথার প্রচলন বিদ্যমান। তাছাড়া ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা রাজ্যেও এ ধরণের কৃষি ব্যবস্থা দেখা যায়।

সামন্ততান্ত্রিক ও ধনতান্ত্রিক কৃষির মধ্যে পার্থক্য:

ধনতান্ত্রিক কৃষি ব্যক্তিগত উদ্যোক্তারা সর্বোচ্চ মুনাফা লাভের নিমিত্তে এক ধরণের কৃষি পদ্ধতি।সামন্ততান্ত্রিক ও ধনতান্ত্রিক কৃষির মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১. সামন্ততান্ত্রিক পদ্ধতিতে কৃষকদের অধিকাংশই জমির মালিকানাবিহীন এবং উৎপাদনের খুব সামান্যই পেয়ে থাকে। অন্যদিকে, ধনতান্ত্রিক কৃষি সমাজের সকলের কল্যাণের পরিবর্তে ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষার তাগিদই এ কৃষি পদ্ধতিতে বিদ্যমান।

২. সামন্ততান্ত্রিক কৃষি পদ্ধতিতে উৎপাদন খুবই নিু মানের ও কম কেননা এ ধরণের কৃষি পদ্ধতিতে মৃত্তিকার উর্বরতা ক্ষমতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পায় এবং উৎপাদন পদ্ধতি প্রায় অপরিবর্তিত থাকে। অন্যদিকে, ধনতান্ত্রিক কৃষি পদ্ধতিতে জমির মালিক বাজারে পণ্য সামগ্রী বিক্রীর মাধ্যমে অতিরিক্ত মুনাফার আশায় পুনরায় পুজি বিনিয়োগ করে থাকেন।

৩. সামন্ততান্ত্রিক কৃষি পদ্ধতি জমির প্রকৃত মালিক থাকেন অনুপস্থিত। অন্যদিকে, ধনতান্ত্রিক ধরণের কৃষিতে যুগান্তকারী উদ্ভাবন ঘটে, প্রচুর যন্ত্রের ব্যবহার, উন্নত সার ও বীজ, কীটনাশক ইত্যাদির ব্যাপক ব্যবহার এবং জমি ও মাথাপিছু উৎপাদনে আকাশ কুসুম বৃদ্ধি পায়।