কৃষি খামার ও কৃষিজোতের মধ্যে পার্থক্য

কৃষি খামার (Agricultural Farm):

অর্থনৈতিক খামার বলতে সে আয়তনের জমিকে বুঝায় যা চাষ করে সকল ব্যয় নির্বাহের পর কৃষক নিজে এবং তার পরিবারের সকলে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবননির্বাহ করতে পারে। অর্থাৎ একজন কৃষক ফসল ফলানোর জন্য যে জমি ব্যবহার করে থাকে কৃষি খামার বলে। কৃষি অর্থনীতির আলোকে খামার বলতে আবাদযোগ্য একখণ্ড জমি বুঝায় যা কৃষি অথবা তার সাথে জড়িত পণ্য উৎপাদনে নিয়োজিত। একজন কৃষক তার অধীনস্থ কৃষি জোতে কী শস্য, কী পরিমাণে এবং কোন পদ্ধতিতে উৎপাদন করা হবে সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়।

এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী একককে খামার বলে। তবে খামার ব্যবস্থা আবার শহর কিংবা গ্রামাঞ্চলে হতে পারে। সেক্ষেত্রে কৃষিভিত্তিক উৎপাদন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে যে খামারের অবদান বেশি সেটিই হলো কৃষি খামার। আর কৃষি খামারের অবস্থান সবসময় কৃষিভিত্তিক উৎপাদনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে।

কৃষিজোত (Farmland):

কৃষিজোত বলতে আমরা বুঝি যে, ক্রষক এক খন্ড জমিতে যে পরিমান ফলন ফলায় তাকেই কৃষিজোত। অর্থাৎ যে আয়তন জমির ওপর একজন কৃষক কৃষিকাজ পরিচালনা করে তাকে কৃষি জোত বলে। কৃষিজোতের মালিকানা সাধারণত একক হয়ে থাকে। কৃষিজোতের নিদিষ্ট কোন আয়তন নেই। তবে কৃষিজোত ছোট, বড় ‍ও মাঝারি আকারের হতে পারে। আমাদের এই দেশে কৃষি খামারের চেয়ে কৃষিজোত বেশি পরিলক্ষিত হয়।

কৃষি খামার ও কৃষিজোতের মধ্যে পার্থক্যঃ

কৃষি খামার ও কৃষিজোতের ধারণা দুটির অর্থ খুব কাছাকাছি হলেও উভয়ের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য বিদ্যমান। কৃষি খামার ও কৃষিজোতের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। একজন কৃষক বা সংগঠকের নিয়ন্ত্রণে যে পরিমাণ জমিতে কৃষি উৎপাদন করা হয়, তাকে কৃষিজোত বলে। অন্যদিকে, কোনো কৃষিজোতে যখন চাষাবাদের পরিকল্পনা করা হয়, তখন সেটি কৃষি খামার হিসেবে বিবেচিত হয়।

২। কৃষিকাজের জন্য কৃষকের অধীনে একটি অখণ্ড কৃষিজমিই হলো কৃষিজোত। অন্যদিকে, একাধিক কৃষিজোত নিয়ে কৃষি খামার গঠিত হয়।

৩। খামারের মালিকানা একক, অংশীদারি অথবা যৌথ মূলধনী হতে পারে। অন্যদিকে, কৃষিজোতের মালিকানা সাধারণত একক হয়ে থাকে।

৪। কৃষিজোতের নির্দিষ্ট কোনো আকার বা আয়তন নেই। এ রকম জোত বড়, মাঝারি কিংবা ক্ষুদ্র হতে পারে। কিন্তু কৃষি খামারের নির্দিষ্ট নামে ও আয়তন আছে। যেমন- মৎস্য খামার, পশুপালন খামার ইত্যাদি।