বলের ঘাত ও ঘাত বলের মধ্যে পার্থক্য

বলের ঘাত (Impulsive Force):

কোনো বস্তুর উপর স্থির মানের কোনো বল কিছু সময় ধরে ক্রিয়া করলে, ওই বলের মান এবং ক্রিয়া করার সময় এর গুণফলকে ওই বলের ঘাত বা আবেগ বলা হয়। … বলের ঘাত ভরবেগের পরিবর্তনের সমান – ব্যাখ্যা করো। ধরি m ভরের কোন বস্তুর উপর t সময় ধরে F মানের একটি বল প্রয়োগ করায় বস্তুটির বেগ u থেকে বেড়ে v হল ।বলের ঘাত হল ভেক্টর রাশি। যথা:

বলের ঘাত =প্রযুক্ত বল × সময়

বলের ঘাতের মাত্রা = বলের মাত্রা × সময়ের মাত্রা = [MLT-2][T] =[ MLT-1 ]
ধরি m ভরের কোন বস্তুর উপর t সময় ধরে F মানের একটি বল প্রয়োগ করায় বস্তুটির বেগ u থেকে বেড়ে v হল ।
এ ক্ষেত্রে প্রযুক্ত বলের ঘাত (I) =F×t
আবার নিউটনের দ্বিতীয় গতিসূত্র অনুসারে, প্র
প্রযুক্তি বল (F) = ma=m×( v-u)/t
বা, Ft=m(v-u)
বা, I=m(v-u)
বলের ঘাত = বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তন।

ঘাত বল (Impulse of a Force):

খুব অল্প সময়ের জন্য খুব বড় মানের যে বল কোন বস্তুর উপর প্রযুক্ত হয় তাকে ঘাত বল বলে। অর্থাৎ খুব সীমিত সময়ের জন্য খুব বড় মানের ঘাত বল প্রযুক্ত হয়। অনেক সময় এ ঘাত বলের মান এত বড় হয় যে এর ক্রিয়াকাল খুব কম হলেও এর প্রভাব দৃষ্টিগ্রাহ্য হয়। র‌্যাকেট কর্তৃক প্রযুক্ত বল F টেনিস বলটির ভরবেগ পরিবর্তন করে। ফুটবলে ঠিক করার সময় ফুটবলে পা দিয়ে যে বল প্রয়োগ করা হয় তা ঘাত বল। যেহেতু ঘাতবল এক প্রকারের বল যা ক্ষণস্থায়ী তাই ঘাট বলের একক ও বলের একক ভিন্ন নয়। তাই ঘাত বলের একক সিজিএস পদ্ধতিতে ডাইন ও এস আই পদ্ধতিতে নিউটন।
ঘাত বলের মাত্রা [MLT-2]

বলের ঘাত ও ঘাত বলের মধ্যে পার্থক্য:

খুব অল্প সময়ের জন্য খুব বড় মানের যে বল কোন বস্তুর উপর প্রযুক্ত হয় তাকে ঘাত বল বলে। বলের ঘাত ও ঘাত বলের মধ্যে পার্থক্য নিচে আলোচনা করা হয়েছে-

১। বস্তুর উপর প্রযুক্ত বলের মান ও ক্রিয়াকাল এর গুণফল হলো বলের ঘাত। অন্যদিকে বৃহৎ মান বিশিষ্ট ক্ষণস্থায়ী বল হল ঘাত বল।

২। বলের ঘাত হলো ফলাফল (Effect)। অন্যদিকে ঘাত বল হলো কারণ (Cause)

৩। বলের ঘাতের মাত্রা [MLT-1] । অন্যদিকে বলের ঘাতের মাত্রা [MLT-2]

৪। বলের ঘাতের প্রভাবে বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তন ঘটে। অন্যদিকে ঘাত বলের প্রভাবে বস্তুতে অল্প সময়ে বৃহৎ ত্বরণ সৃষ্টি হয়।

৫। বলের ঘাত এর ক্ষেত্রে ক্রিয়াশীল বল F=ma সমীকরণ মেনে চলে। অর্থাৎ ভর ও ত্বরণের গুণফল দ্বারা ক্রিয়াশীল বলের পরিমাপ করা হয়।অন্যদিকে ঘাত বলের ক্ষেত্রে ক্রিয়াকাল অল্প হওয়ায় ভরবেগের পরিবর্তনের দ্বারা ঘাত বলের (F.t) পরিমাপ করা হয়।