অন্তঃকোষীয় ও বহিঃকোষীয় পরিপাকের মধ্যে পার্থক্য

অন্তঃকোষীয় পরিপাক:

কোনো নির্দিষ্ট কোষের অভ্যন্তরে খাদ্য পরিপাক হওয়ার পদ্ধতিকে অন্তঃকোষীয় পরিপাক বলে। অন্যভাবে বলা যায় যে, কোষের অভ্যন্তরে খাদ্যবস্তুর পরিপাককে অন্তঃকোষীয় পরিপাক বলে। জটিল অণুর খাবারকে সরল করার কাজটিই হলো পরিপাক আর এর সাথে সংশ্লিষ্ট তন্ত্রটি হলো পরিপাকতন্ত্র। কিছু নিম্নতর প্রাণীতে কোষের অভ্যন্তরে পরিপাক সম্পন্ন হয় যা অন্তঃকোষীয় পরিপাক নামে পরিচিত।
কোনো নির্দিষ্ট কোষের অভ্যন্তরে খাদ্য পরিপাক হওয়ার পদ্ধতিকে অন্তঃকোষীয় পরিপাক বলে।

বহিঃকোষীয় পরিপাক:

কোন নির্দিষ্ট কোষের অভ্যন্তরে পরিপাক না হয়ে কোষের বাইরে কোন নালী বা থলির মধ্যে যে পরিপাক সংঘটিত হয় তাকে বহিঃকোষীয় পরিপাক বলে। অমাদের বেচে থাকার জন্য শক্তির দরকার। প্রানী মাত্রই তার গৃহীত খাদ্য থেকে শক্তি অর্জন করে। আমাদের দেহকে অবশ্যই গৃহীত জটিল অণুর খাদ্য সামগ্রিকে সরল অণুতে অথাৎ দেহের উপযোগি শোষণযোগ্য উপাদানে পরিণত করে নিতে হয়। জটিল অণুর খাবারকে সরল করার কাজটিই হলো পরিপাক আর এর সাথে সংশ্লিষ্ট তন্ত্রটি হলো পরিপাকতন্ত্র। কোষের বাইরে সংঘটিত পরিমাপকে বহিঃকোষীয় পরিপাক বলে।

হাইড্রার সিলেন্টেরণে আন্তঃকোষীয় বা বহিঃকোষীয় পরিপাক পদ্ধতিতে খাদ্যের কিছুটা পরিপাক ঘটে। … এই কোষের অভ্যন্তরে খাদ্যগহ্বরে খাদ্য জমা হয় ও পরিপাক হয়।

অন্তঃকোষীয় ও বহিঃকোষীয় পরিপাকের মধ্যে পার্থক্য:

কোন নির্দিষ্ট কোষের অভ্যন্তরে পরিপাক না হয়ে কোষের বাইরে কোন নালী বা থলির মধ্যে যে পরিপাক সংঘটিত হয়। অন্তঃকোষীয় ও বহিঃকোষীয় পরিপাকের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। অন্তঃকোষীয় পরিপাক কোষের অভ্যন্তরে ঘটে। অন্যদিকে বহিঃকোষীয় পরিপাক কোষের বাইরে সিলেন্টেরনে বা পরিপাক নালীর অভ্যন্তরে ঘটে।

২। অন্তঃকোষীয় পরিপাকে গৃহীত খাদ্য বস্তু খাদ্য গহ্বরে জমা হয়। অন্যদিকে বহিঃকোষীয় পরিপাকে খাদ্য গহ্বর অনুপস্থিত।

৩। অন্তঃকোষীয় পরিপাকে একই কোষের সাইটোপ্লাজম নিঃসৃত এনজাইমের ক্রিয়ায় খাদ্য গহ্বরে খাদ্যের পরিপাক ঘটে। অন্যদিকে বহিঃকোষীয় পরিপাকে ভিন্ন কোষ বা গ্রন্থি নিঃসৃত এনজাইমের ক্রিয়ায় খাদ্যের পরিপাক ঘটে।

৪। অন্তঃ কোষীয় পরিপাকে খাদ্য সার সরাসরি সাইটোপ্লাজমে শোষিত হয়। অন্যদিকে বহিঃকোষীয় পরিপাকে খাদ্য সার রক্ত বা লসিকাতন্ত্রের মাধ্যমে পরিশোষিত হয় ও সমগ্র দেহের কোষে কোষে ছড়িয়ে পড়ে।

৫। অন্তঃকোষীয় পরিপাকে খাদ্যের অপাচ্য অংশ কোষের যে কোন স্থান দিয়ে নিষ্ক্রান্ত হয়। অন্যদিকে বহিঃকোষীয় পরিপাকে নির্দিষ্ট পথে খাদ্যের অপাচ্য অংশ পরিতাক্ত হয়।