ইনভার্টার এবং নন-ইনভার্টার এসির মধ্যে পার্থক্য

ইনভার্টার এসি (Inverter AC ):

একটি ইনভার্টার এসিতে এর কম্প্রেসার সর্বক্ষণ চলতেই থাকে, আর পছন্দের তাপমাত্রা ধরে রাখার জন্য কম্প্রেসারটি সম্পূর্ণ অফ না করে দিয়ে এসিটি এর গতি ধীরে ধীরে বাড়াতে বা কমাতে থাকে। স্পষ্টতই রুমে একদম পারফেক্ট ভাবে একই তাপমাত্রা বজায় রাখার জন্য ইনভার্টার এসিগুলোই সবচেয়ে বেশি কার্যকর। আর সেজন্যই তাপমাত্রার সামান্যতম পরিবর্তনেই যেসব ব্যক্তিদের সমস্যা হয়, তাদের জন্যও ইনভার্টার এসিই সেরা। আর কয়েক মিনিট পর পর একটি শক্তিশালী কম্প্রেসারকে সম্পূর্ণ বন্ধ ও চালু করার প্রয়োজন না পড়ায় এই এসিগুলো তুলনামূলক কম বিদ্যুৎ খরচ করে থাকে।

নন-ইনভার্টার এসি (Non-Inverter AC):

একটি নন ইনভার্টার এসিতে এর কম্প্রেসারটি একটি নির্দিষ্ট গতিতে চলতে থাকে, এর মানে দাঁড়ায় যে কম্প্রেসারটি চালু রেখে দিলে রুমের ভেতরের তাপমাত্রা ক্রমাগত কমতেই থাকবে। ব্যবহারকারীর পছন্দ অনুযায়ী নির্ধারণ করা তাপমাত্রা ধরে রাখার জন্য এসিটি ঠান্ডা কিছুটা বেশি হয়ে গেলেই এর কম্প্রেসারটি বন্ধ করে দেয়, আবার গরম কিছুটা বেড়ে গেলে আবার সেটিকে চালু করে দেয়। এই অন অফ হওয়ার ব্যাপারটা পুরোপুরি একজন ব্যবহারকারীর সেটিংস বা নির্ধারিত তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে।

ইনভার্টার এবং নন-ইনভার্টার এসির মধ্যে পার্থক্য

একটু গরম বেশি পড়লেই মনে হয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বা এসি (এয়ারকন্ডিশনার) কেনার কথা। বাজারে এখন ইনভার্টার ও নন–ইভার্টার প্রযুক্তির এসি পাবেন। দুটোই শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র হলেও এদের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান। ইনভার্টার এবং নন-ইনভার্টার এসির মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। ইনভার্টার প্রযুক্তিতে এসি প্রথমে পূর্ণ শক্তিতে চালু হয়। পরে ঘরের আরামদায়ক তাপমাত্রা ঠিক রেখে এসিটি শক্তি খরচ কমিয়ে নিয়ে আসে। এভাবে কম শক্তিতে চলার কারণে কম বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয় এবং বিদ্যুৎ খরচ কমে আসে।

অন্যদিকে, নন-ইনভার্টার প্রযুক্তির এসি ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে শুধু অন-অফ হওয়ার মাধ্যমে। অর্থাৎ এসি পূর্ণ শক্তিতে চালু হওয়ার পর ঘরের তাপমাত্রা আরামদায়ক অবস্থায় এলে এসির কমপ্রেসর বন্ধ হয়ে যায়। যখন ঘরের তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে যায়, তখন আবার চালু হয়। এভাবে বারবার এসি চালু ও বন্ধ হওয়ার কারণে এসি বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে, যার কারণে বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যায়।

২। ইনভার্টার এসির বড় সুবিধা হচ্ছে ইনভার্টার এসির কমপ্রেসর মোটরটি প্রয়োজনমতো নিজস্ব চলার গতি পরিবর্তন করতে পারে। ইনভার্টার এসিতে এমন একটি সেন্সর থাকে, যা ঘরের তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে কমপ্রেসর পুরোপুরি বন্ধ না করে, মোটরটির চলার গতি কমিয়ে দেয়। এর কারণেই বিদ্যুৎ খরচ কমে আসে, যা পরিবেশবান্ধব। অন্যদিকে, সাধারণ এসির কমপ্রেসর বারবার চালু-বন্ধ হয়, তাই অনেক বেশি বিদ্যুৎ খরচ হয়।

৩। ইনভার্টার এসির কম্প্রেসার নন-ইনভার্টার এসির মত বার বার চালু এবং বন্ধ হয় না। প্রয়োজনমত গতি কমিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকে। অন্যদিকে, নন-ইনভার্টার এসির কম্প্রেসার বার বার বেশ শব্দ করে চালু এবং বন্ধ হয়। এমনকি যখন চলে তখনও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বেশ শব্দ তৈরি করে। তাই এ ক্ষেত্রেও ইনভার্টার এসি সাধারণ এসি থেকে এগিয়ে থাকছে।

৪। ইনভার্টার এসিতে আপনার ঘর দ্রুত ঠান্ডা হবে, কারণ এসি চালু হবার সময়ে ইনভার্টার এসি সাধারণ এসির চেয়ে বেশি শক্তি খরচ করে দ্রুত ঘর ঠান্ডা করে, এরপর শক্তি কমিয়ে ধীরে চলতে থাকে। অন্যদিকে, নন-ইনভার্টার এসি চালুর সময় স্বাভাবিক শক্তিতেই চালু হয়, কিছু সময় ধরে ঘর ঠান্ডা করার পর আবার পুরো বন্ধ হয়। ঘরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে আবার চালু হয়।