ধাতব বন্ধন ও সমজোযী বন্ধনের পার্থক্য

ধাতব বন্ধন:

একটি ধাতু অপর একটি অধাতুর মধ্যে আয়নিক বন্ধন এবং দুটি অধাতুর মধ্যে সমযোজী বন্ধন গঠিত হয়। কিন্তু দুটি ধাতব পরমাণু কাছাকাছি এলে তাদের মধ্যে যে বন্ধন গঠিত হয় তাকে ধাতব বন্ধন বলে। ধাতু সমূহ যে ধরনের বন্ধনের মাধ্যমে পরস্পরের সাথে যুক্ত থাকে তা ই ধাতব বন্ধন। এই সঞ্চারণশীল ইলেকট্রন এবং ধনাত্মক চার্জ যুক্ত ধাতব আয়নের মধ্যে হয়ে থাকে। এই বিশেষ ধরনের বন্ধনের কারণেই ধাতু তাপ এবং বিদ্যুৎ পরিবহন করে।

এই বন্ধন সঞ্চারণশীল ইলেকট্রন এবং ধনাত্মক চার্জ যুক্ত ধাতব আয়নের মধ্যে হয়ে থাকে। ধাতব বন্ধন ধাতুর অনেকগুলো ভৌত ধর্ম যেমন: যান্ত্রিক শক্তি, নমনীয়তা, তাপ এবং বৈদ্যুতিক রোধ এবং পরিবাহিতা, অস্বচ্ছতা এবং দীপ্তির জন্য দায়ী।

সমজোযী বন্ধন:

ইলেকট্রন শেয়ারের মাধ্যমে দুইটি পরমাণুর মধ্যে যে বন্ধনের সৃষ্টি হয়, তাকে সমযোজী বন্ধন বলে। সমযোজী বন্ধন বিশিষ্ট যৌগকে সমযোজী যৌগ বলা হয়। সমযোজী যৌগ নিম্ন গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট, বিদ্যুৎ কুপরিবাহী, সাধারণত পানিতে অদ্রবণীয়, কিন্তু জৈব দ্রাবকে দ্রবণীয়। পরমাণুসমুহের মধ্যে সমযোজী বন্ধন তখনই গঠিত হয় যখন এদের তড়িৎ ঋণাত্মকতা সমান বা অতি নিকটবর্তী হয়।

সমযোজী এক বন্ধন- দুটি পরমাণুর মধ্যে একটি ইলেকট্রন জোড় সমভাবে ব্যবহৃত হয়ে সমযোজী একবন্ধন গঠন করে। উদাহরণ- HCl, Cl2 এর ক্ষেত্রে আমরা সমযোজী একবন্ধন দেখতে পাই। 2. সমযোজী দ্বি বন্ধন- দুটি পরমাণুর মধ্যে দুটি ইলেকট্রন জোড় সমভাবে ব্যবহৃত হয়ে সমযোজী দ্বিবন্ধন গঠন করে।

ধাতব বন্ধন ও সমজোযী বন্ধনের পার্থক্য:

একটি ধাতু অপর একটি অধাতুর মধ্যে আয়নিক বন্ধন এবং দুটি অধাতুর মধ্যে সমযোজী বন্ধন গঠিত হয়। ধাতব বন্ধন ও সমজোযী বন্ধনের পার্থক্য নিম্নরুপ-

১। ধাতব বন্ধনে ধাতব মৌলের মধ্যে এইরূপ বন্ধন গঠিত হয়। অন্যদিকে সমজোযী বন্ধনে একই বা ভিন্ন ইলেক্ট্রোনেগেটিভ অধাতব মৌলের মধ্যে ইলেক্ট্রন ভাগাভাগির মাধ্যমে গঠিত হয়।

২। ধাতব বন্ধনে নিষ্ক্রিয় মৌলের কাঠামাে অর্জিত হয় না। অন্যদিকে সমজোযী বন্ধনে নিষ্ক্রিয় মৌলের কাঠামাে অর্জিত হয়।

৩। ধাতব বন্ধনে ইলেঞ্জনসমূহ সঞ্চালনক্ষম নয়। অন্যদিকে সমজোযী বন্ধনে ইন্ত্রেনসমূহ সঞ্চালনক্ষম।

৪। ধাতব বন্ধনের কোন দিক নাই। অন্যদিকে সমজোযী বন্ধনের দিক আছে।

৫। ধাতব বন্ধন ইলেক্ট্রনের সঞ্চারণশীলতার কারণে পরমাণুর আকর্ষণ কম থাকে। সুতরাং ধাতব বন্ধন সমযােজী বন্ধন অপেক্ষা দূর্বল। উদাহরণ- এক মােল কপার ধাতুকে বাম্পায়িত করতে কম শক্তির প্রয়ােজন হয় কিন্তু সমযােজী বন্ধন বিশিষ্ট এক মােল গ্রাফাইটকে বাম্পায়িত করতে যথেষ্ট শক্তির প্রয়ােজন হয়। অন্যদিকে সমজোযী বন্ধন সঞ্চালনক্ষম ইন্ত্রেনের কারণে পরমাণুর নিউক্লিয়া। ও যােজনী স্তরের ইলেট্রনের মধ্যে আকর্ষণ বেশি নিউক্লিয়াস ও যােজনী স্তরের ইলেক্ট্রনের মধ্যে থাকে। সুতরাং সমযােজী বন্ধন শক্তিশালী।


রসায়ন সংক্রান্ত আরো পার্থক্য পড়ুনঃ Chemistry

আরোও পার্থক্য পড়ুনঃ যোগান রেখা ও সূচির মধ্যে পার্থক্যস্বাধীন চলক ও অধীন চলকের মধ্যে পার্থক্যএকমাত্রিক ও দ্বিঘাত অপেক্ষকের মধ্যে পার্থক্যমুদ্রাস্ফীতি এবং অপসারণের মধ্যে পার্থক্যকৌণিক বেগ ও রৈখিক বেগের মধ্যে পার্থক্য,