ধাতু ও শব্দের মধ্যে পার্থক্য

ধাতুঃ

ক্রিয়ার মূল কিংবা এর যে অবিভাজ্য অংশ এর অন্তর্নিহিত মূল ভাবটির দ্যোতনা (দ্যোতনা=সূচনা, প্রকাশনা) করে, অথবা বিশ্লেষণ করা যায় না এ রকম যে ক্ষুদ্রতম ধ্বনি-সমষ্টি ক্রিয়ার বস্তু বা গুণ বা অবস্থান বুঝায় তাকে ধাতু বলে। যেমন- ‘করা’ ক্রিয়ার মূল ‘কর্‌’ একটি ধাতু। ধাতু নির্দেশ করতে ব্যবহৃত চিহ্নটিকে (√)করণী বলে।

শব্দঃ

একটি একক ধ্বনি দিয়ে কখনো কখনো ভাব প্রকাশ করা গেলেও মানবমনের অসংখ‍্য বিচিত্র ভাব প্রকাশের জন‍্য একক ধ্বনি যথেষ্ট নয়। তাই ভাষায় উপস্থিত ধ্বনিগুলি‌কে বিভিন্ন সমন্বয়ে সাজিয়ে ধ্বনির সমষ্টি তৈরি করা হয়। এই সমষ্টি‌গুলি একটি করে অর্থ প্রকাশ করে। এই ধরণের ধ্বনিসমষ্টিকে শব্দ বলে। তবে একটি একক ধ্বনিও শব্দ হতে পারে, যদি তা দিয়ে কোনো অর্থ প্রকাশ করা যায়।
যেমনঃ ক্+অ+ল্+অ+ম্+অ= কলম।

ধাতু ও শব্দের মধ্যে পার্থক্যঃ

ধাতু ও শব্দ, এই দুটিই হল ভাষার প্রাথমিক উপাদান। এদের মধ্যে যেমন কিছু মিল রয়েছে, তেমনি কিছু অমিল‌ও রয়েছে। শব্দ ও ধাতুর মধ্যে পার্থক্যগুলি নিচে আলোচনা করা হলো-

১। শব্দ থেকে নামপদ সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে ধাতু থেকে ক্রিয়াপদ সৃষ্টি হয়।

২। শব্দের সাথে শব্দবিভক্তি যুক্ত হয়। অন্যদিকে ধাতুর সাথে ক্রিয়াবিভক্তি যুক্ত হয়।

৩। শব্দের সাথে নির্দেশক যুক্ত হতে পারে। অন্যদিকে ধাতুর সাথে নির্দেশক যুক্ত হতে পারে না।

৪। শব্দের দ্বারা বস্তু বা ভাবের অর্থ বোঝায়। অন্যদিকে ধাতুর দ্বারা সক্রিয়তার অর্থ বোঝায়।

৫। শব্দের সাথে তদ্ধিত প্রত্যয় যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠিত হয়। অন্যদিকে ধাতুর সাথে কৃৎ প্রত্যয় যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠিত হয়।

৬। ক্রিয়ার সাথে সম্পর্ক অনুযায়ী শব্দের রূপ বদলায়। অন্যদিকে কাল ও পুরুষ অনুযায়ী ধাতুর রূপ বদলায়।