অনুলোম ও বিলোম চ্যুতির মধ্যে পার্থক্য

অনুলোম চ্যুতি (Normal Fault):

শিলা স্তরে টানের ফলে ঊদ্ধস্তুপ অধোস্তুপের তুলনায় চ্যুতিতল বরাবর নিচের দিকে অবনমিত হলে, যে চ্যুতির সৃষ্টি হয়, তাকে অনুলোম চ্যুতি বলে। ভূ-আলোড়নের ফলে শিলাস্তরের ওপর টানের প্রভাবে অনুলোম চ্যুতির সৃষ্টি হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক চ্যুতির নতির পরিমাণ (6ডিগ্রী) বেশী হওয়ায় চ্যুতি কোন ও ব্যবধীর পরিমাণ কম হয়। অনুলোম চ্যুতি সৃষ্টির সময় চ্যুতিতলের মান সাধারণত ৪৫ ডিগ্রি থেকে ৯০ ডিগ্রির মতো হয়। তাছাড়াও অনুভূমিক তল বরাবর চ্যুতি ভূভাগের সম্প্রসারন হয়।

বিলোম চ্যুতি (Reserve Fault):

শিলাস্তরের সংকোচন বা সংনমনের ফলে উদ্ধস্তুপ চ্যুতিতল বরাবর অধোস্তুপের ওপর উত্থিত হলে, যে চ্যুতির সৃষ্টি হয়, সেই চ্যুতি কে বিলোম চ্যুতি বলে। ঝুলন্ত দেয়াল অবনত পার্শ্বের উপর বেশি হেলে থাকে বলে তাকে বিপরীত চ্যুতি বলে। ভূ-আলোড়নের ফলে শিলাস্তরের ওপর সংকোচন বা সংনমনের প্রভাবে বিলোম চ্যুতির সৃষ্টি। বিলোম চ্যুতিতে ভূভাগের ক্ষেত্রফল কম এবং ভূমিরুপ হিসেবে ঝুলন্ত উপত্যকা গঠিত হয় l

অনুলোম ও বিলোম চ্যুতির মধ্যে পার্থক্যঃ

যে চ্যুতিতে চ্যুতিতল বরাবর অধোস্তূপ অপেক্ষা ঊর্ধ্ব স্তূপ নীচের দিকে নেমে যায় তাকে অনুলোম চ্যুতি বলে। অনুলোম ও বিলোম চ্যুতির মধ্যে পার্থক্য নিচে দেখানো হলো-

১। যে চ্যুতিতে চ্যুতিতল বরাবর অধোস্তূপ অপেক্ষা ঊর্ধ্ব স্তূপ নীচের দিকে নেমে যায় তাকে অনুলোম চ্যুতি বলে। অন্যদিকে, অত্যাধিক সংনমন বলের প্রভাবে খাঁড়া চ্যুতিতল বরাবর অধোস্তূপের উপর ঊর্ধ্ব স্তূপ উঠে এসে যে চ্যুতি গঠণ করে তাকে বিলোম চ্যুতি বলেl

২। অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক চ্যুতির নতির পরিমাণ (6ডিগ্রী) বেশী হওয়ায় চ্যুতি কোন ও ব্যবধীর পরিমাণ কম হয়। অন্যদিকে, বিলোম চ্যুতিতে নতির পরিমাণ (40 ডিগ্রী) কম হওয়ায় চ্যুতি কোন ও ব্যবধীর পরিমাণ বেশী হয় l

৩। অনুলোম চ্যুতিতে ভূভাগের ক্ষেত্রফল বেশী এবং খাঁড়া ঢাল বিশিষ্ট চ্যুতি ভৃগু গঠিত হয়। অন্যদিকে, যেখানে বিলোম চ্যুতিতে ভূভাগের ক্ষেত্রফল কম এবং ভূমিরুপ হিসেবে ঝুলন্ত উপত্যকা গঠিত হয় l

৪। ভূ-আলোড়নের ফলে শিলাস্তরের ওপর টানের প্রভাবে অনুলোম চ্যুতির সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে, ভূ-আলোড়নের ফলে শিলাস্তরের ওপর সংকোচন বা সংনমনের প্রভাবে বিলোম চ্যুতির সৃষ্টি হয়।