পরজীবী ও মিথোজীবী এর মধ্যে পার্থক্য

পরজীবী:

যে সকল জবি অন্য জীবের ভিতর বা বাহিরে সম সময় বা সাময়িকভাবে অবস্থান করে এবং পুষ্টির জন্য সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে আশ্রয়দাতা জীবের উপর নির্ভর করে। তাদেরকে পরজীবী বলে এবং আশ্রয়দাতা জীবকে পরজীবীর পোষক বলে। পরজীবী দুই প্রকার। যথাঃ

ক) বহি:পরজীবীঃ এরা পোষক দেহের বাহিরে অবস্থান করে। যেমন- উকুন, জোঁক।

খ) অন্ত:পরজীবীঃ এরা পোষক দেহের ভিতরে অবস্থান করে। যেমন- ম্যালেরিয়া জীবাণু, ক্রিমি।

মিথোজীবী:

যদি দুটি ভিন্ন প্রজাতির জীব একত্রে বসবাস করে এবং তারা যদি প্রত্যেকেই একে অপরের দ্বারা উপকৃত হয় , তাকে মিথোজীবী বলে।আর এভাবে জীবন যাপন এর প্রক্রিয়াকে মিথোজীবী বা সিমবায়োটিক বলে। যে পুষ্টি প্রক্রিয়ায় দুটি ভিন্ন ধরনের জীব পরস্পরের উপর নির্ভরশীল হয়ে বসবাস করে, তাকে মিথোজীবীয় পুষ্টি বলে। মিথোজীবী পুষ্টি দু রকমের হয়। যথাঃ

১৷ ব্যতিহারী(Mutualism):

এই রকম পুষ্টিতে দুটি জীব সহাবস্থান করে পরস্পরের সাহায্যে পুষ্টি সম্পন্ন করে, যেমন – লাইকেন।

২৷ সহভোক্তা (Commensalism):

এই রকম পুষ্টিতে দুটি জীব সহাবস্থানে থেকেও পরস্পর পৃথক ভাবে পুষ্টি সম্পন্ন করে, যেমন – পরাশ্রয়ী উদ্ভিদ রাস্না, গজপিপুল ইত্যাদি।

পরজীবী ও মিথোজীবী এর মধ্যে পার্থক্য:

যদি দুটি ভিন্ন প্রজাতির জীব একত্রে বসবাস করে এবং তারা যদি প্রত্যেকেই একে অপরের দ্বারা উপকৃত হয়। পরজীবী ও মিথোজীবী এর মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। পুষ্টির জন্য পরজীবীরা জীবিত পোষকের ওপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে পুষ্টির জন্য মিথোজীবীরা পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল।

২। পরজীবীরা পোষকের দেহ থেকে এরা সরাসরি সরল খাদ্য শোষণ করে। অন্যদিকে মিথোজীবীর জীব দুটি উভয়েই একে অন্যের থেকে সরল খাদ্য শোষণ করে।

৩। পরজীবীরা পোষকের ক্ষতিসাধন করে। অন্যদিকে মিথোজীবীরা উভয়েই উপকৃত হয়।

৪। পরজীবীরা পোষকের দেহের ভেতরে অথবা বাইরে অবস্থান করে। অন্যদিকে মিথোজীবীরা সাধারণত একটি অপরটির দেহের ভেতরে অবস্থান করে।

৫। পরজীবীদের পুষ্টি প্রক্রিয়াকে পরজীবীয় পুষ্টি বলে। অন্যদিকে মিথোজীবীদের পুষ্টি প্রক্রিয়াকে মিথোজীবীয় পুষ্টি বলে।

৬। স্বর্ণলতা, কৃমি ইত্যাদি পরজীবীর উদাহরণ। অন্যদিকে লাইকেন, রাইজোবিয়াম ইত্যাদি মিথোজীবীর উদাহরণ।