PCOD ও PCOS-এর মধ্যে পার্থক্য

পিসিওডি (PCOD):

PCOD অসুখ থাকলে ডিম্বাশয় অপরিণত ডিম্বাণু নির্গত করে, অচিরেই যা সিস্টে পরিণত হয়। এর ফলে অনিয়মিত ঋতুস্রাব, ওজন বৃদ্ধি,চুল উঠে যাওয়া, তলপেটে ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। পিসিওডি থাকলে ডিম্বাশয় আকারে অনেকটা বেড়ে যায় এবং তা থেকে বেশিমাত্রায় পুরুষ হরমোন নিঃসরণ ঘটতে থাকে। পলিসিস্টিক ওভারিয়ান রোগ (PCOD) হল একটি হরমোনজনিত অবস্থা যা প্রায় 5-10% মহিলাকে তাদের সন্তান জন্মদানের বয়সে (12 থেকে 45 বছর) প্রভাবিত করে। PCOD এর ব্যাপকতা ভিন্ন হলেও, এটি প্রায় 9% থেকে 22% ভারতীয় মহিলাদের প্রভাবিত করে। চীন এবং শ্রীলঙ্কায় সংখ্যা প্রায় 2% থেকে 7%। এই অবস্থায়, একজন মহিলার হরমোন ভারসাম্যের বাইরে চলে যায়।

এটি ডিম্বস্ফোটনের অনুপস্থিতি, অনিয়মিত মাসিক, গর্ভধারণে অসুবিধা, ওজন বৃদ্ধি, ব্রণ এবং হিরসুটিজম সহ বিভিন্ন উপসর্গের দিকে পরিচালিত করে। PCOD, যা PCOS (পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম) নামেও পরিচিত, যদি চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে ডায়াবেটিস, স্থূলতা, হৃদরোগ এবং উচ্চ কোলেস্টেরলের মতো আরও স্বাস্থ্যগত জটিলতা হতে পারে।

পিসিওএস (PCOS):

PCOS হল এক ধরনের বিপাকীয় ব্যাধি, যা PCOD-এর তুলনায় বেশি মারাত্মক। এন্ডোক্রিন সিস্টেমের গোলমালে মূলত এই অসুখ হয়ে থাকে। এই অসুখের কারণে শরীরে পুরুষ হরমোনের আধিক্য ঘটে। ফলে ডিম্বস্ফোটন অনিয়মিত হয়ে যায় এবং ডিম্বাশয়ে অনেক সিস্ট তৈরি হয়। এটি ডিমের নিঃসরণ বন্ধ করে দেয়, অ্যানোভুলেশনের দিকে নিয়ে যায়। PCOS-এর লক্ষণগুলির মধ্যে চুল পড়া, স্থূলতা এবং বন্ধ্যাত্ব অন্যতম।

PCOD ও PCOS-এর মধ্যে পার্থক্যঃ

PCOS হল এক ধরনের বিপাকীয় ব্যাধি। এই অসুখ থাকলে ডিম্বাশয় অপরিণত ডিম্বাণু নির্গত করে। PCOD ও PCOS-এর মধ্যে পার্থক্য নিচে দেখানো হয়েছে-

১। পিসিওডি সেই অর্থে কোনও রোগ নয়। অন্যদিকে, পিসিওএস তুলনায় অনেক বেশি জটিল রোগ।

২। ঠিক মতো খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চার মাধ্যমেই পিসিওডি সারানো সম্ভব। অন্যদিকে, পিসিওএস যেহেতু এক ধরনের বিপাকীয় অসুখ, তাই এটা সারাতে চিকিৎসকের সাহায্য প্রয়োজন।

৩। পিসিওডির কারণ শরীরে হরমোনের তারতম্য হয়। অন্যদিকে, পিসিওএসের কারণ এন্ডোক্রিন সিস্টেমের গোলমাল দেখা দিতে পারে। এন্ডোক্রিন সিস্টেমের গোলমালের কারণেই শরীরে হরমোনের হ্রাস বা আধিক্য দেখা দেয়।

৪। হরমোনের এই তারতম্য একটা উপসর্গ, কোনও অসুখ নয়। পিসিওডিতে এই উপসর্গেরই প্রকাশ। অন্যদিকে, পিসিওএস সম্পূর্ণতই একটি অসুখ।

৫। পিসিওডি থাকলে গর্ভধারণ ও সন্তান উৎপাদনের ক্ষেত্রে তেমন কোনও সমস্যা হয় না। কিন্তু পিসিওএস থাকলে গর্ভধারণের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। অনেক সময় গর্ভপাতের আশঙ্কাও থাকে। কারণ পিসিওএস ডিম্বস্ফোটনের প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে।