সম্পাদ্য এবং উপপাদ্যের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদ্য:

যে প্রতিজ্ঞায় কোন জ্যামিতিক বিষয় অংকন করে দেখানো হয় এবং যুক্তি দ্বারা অংকনের নির্ভুলতা প্রমাণ করা হয় তাকে সম্পাদ্য বলা হয়।এখানে প্রতিজ্ঞা বলতে জ্যামিতিতে কোনো আলোচিত বিষয়কে বোঝানো হয়েছে অর্থাৎ, জ্যামিতিতে আলোচিত যেকোনো বিষয়কে জ্যামিতিক প্রতিজ্ঞা বলে। আর তথ্য ও উপাত্ত বলতে যেসব শর্তাবলীর উপর নির্ভর করে চিত্র অংকন করা হয় তাকে বোঝায়। অর্থাৎ, চিত্র অংকনের জন্য যা দেওয়া থাকে যেমন – বাহুর দৈর্ঘ্য, কোণের পরিমাপ ইত্যাদিকে তথ্য ও উপাত্ত বলে। সমতল জ্যামিতি সম্পাদ্য নিয়ে আলোচনা করে। সম্পাদ্যে অংকনের জন্য কতকগুলো উপাদানের প্রয়োজন হয়। এসব উপাসমূহকে জ্যামিতিক চিত্র অংকনের যন্ত্রাংশ বা টুলস বলে। সাধারণত: চিত্র অংকনের অংকনের জন্য যেসমস্ত যন্ত্রাংশ ব্যবহৃত হয় তা হলো – কম্পাস, রুলার বা স্কেল, চাঁদা, পেন্সিল, রাবার ইত্যাদি।

উপপাদ্য:

যে প্রতিজ্ঞায় কোন জ্যামিতিক বিষয়কে যুক্তি দ্বারা প্রমাণ করা হয় তাকে উপপাদ্য বলে। উপপাদ্যকে গাণিতিক সমীকরণের সাহায্যে প্রকাশ করা যায় তবে বাংলা,ইংরেজির মত সাধারণ ভাষাতেও প্রকাশ করা যায়। বেশিভাগ উপপাদ্যও পূর্বের কোনো হাইপোথিসিসের উপর নির্ভরশীল। যেমন- যদি ক সত্য হয় তবে খ সত্য। এই উপপাদ্যটিতে বলা হয়নি “খ” সত্য,এখানে বলা হয়েছে “খ” সত্য হবেই যদি “ক” সত্য হয়। এখানে ক হলো হাইপোথিসিস এবং খ হলো সিদ্ধান্ত। উপপাদ্যকে প্রায়ই তুচ্ছ, কঠিন, গভীর এমনকি সুন্দর উপাধি দেয়া হয়। এ ধরনের উপাধি মানুষ থেকে মানুষে পরিবর্তিত হয়, এমনকি সময়ের সাথে সাথেও পরিবর্তিত হয়। যেমন আরো সহজ প্রমাণ আবিষ্কৃত হলে একটি কঠিন উপপাদ্য তুচ্ছ উপাধি পেতে পারে। গভীর উপপাদ্য গুলো খুব সাধারণ ভাবে বর্ণনা করা হয় কিন্তু সেগুলোর প্রমাণে আশ্চর্যজনক ভাবে গণিতের বিভিন্ন জটিল অংশের সংযোগ থাকতে পারে। ফের্মার শেষ উপপাদ্য এ ধরনের উপপাদ্যের একটি পরিচিত উদাহরণ।

সম্পাদ্য এবং উপপাদ্যের মধ্যে পার্থক্যঃ

১। যে প্রতিজ্ঞায় কোন জ্যামিতিক বিষয় অংকন করে দেখানো হয় এবং যুক্তি দ্বারা অংকনের নির্ভুলতা প্রমাণ করা হয় তাকে সম্পাদ্য বলা হয়। অন্যদিকে যে প্রতিজ্ঞায় কোন জ্যামিতিক বিষয়কে যুক্তি দ্বারা প্রমাণ করা হয় তাকে উপপাদ্য বলে।

২। উপপাদ্য হলো সেইসব ধর্ম বা সম্পর্ক যেগুলো প্রমাণ করা যায় বা হয়। সাধারণত জ্যামিতিতেই এর উল্লেখ বেশি। যেমন-
পিথাগোরাসের উপপাদ্য বা “অর্ধবৃত্তস্থ কোণ সমকোণ”। অন্যদিকে সম্পাদ্য হলো জ্যামিতির অঙ্কন যেমন- দুইটি বৃত্তের একটি সরল সাধারণ স্পর্ষক অঙ্কন করা।

৩। উপপাদ্যকে গাণিতিক সমীকরণের সাহায্যে প্রকাশ করা যায়। অন্যদিকে সম্পাদ্যেকে গাণিতিক সমীকরণের সাহায্যে প্রকাশ করা যায় না।

৪। সম্পাদ্য কোন জ্যামিতিক বিষয় অঙ্কন করে দেখানো হয় এবং যুক্তি দ্বারা অঙ্কনের নির্ভুলতা প্রমাণ করা হয়। অন্যদিকে উপপাদ্য কোন জ্যামিতিক বিষয়কে যুক্তি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত করা হয়।