Site icon Parthokko.com.bd | পার্থক্য | Difference Between

বৃষ্টি ও বৃষ্টিপাতের মধ্যে পার্থক্য

বৃষ্টি ও বৃষ্টিপাতের

বৃষ্টি (Rain):

বৃষ্টি হ’ল বোঁটার আকারে তরল জল যা বায়ুমণ্ডলীয় জলীয় বাষ্প থেকে ঘনীভূত হয় এবং এর পরে মহাকর্ষের অধীনে পড়তে যথেষ্ট ভারী হয়ে যায়। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে মেঘের সৃষ্টি করে। এই ফোঁটাগুলি যথেষ্ট পরিমাণে ভারি হলে তা পৃথিবীর বুকে ঝরে পড়ে – একেই বলে বৃষ্টি। বিশ্বের অধিকাংশ অঞ্চলে বৃষ্টি সুপেয় জলের বড় উৎস। বিচিত্র জৈবব্যবস্থাকে বাঁচিয়ে রাখতে, জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলি সচল রাখতে ও কৃষি সেচব্যবস্থা সচল রাখতে বৃষ্টির প্রয়োজন হয়। যদিও সকল প্রকার বৃষ্টি ভূপৃষ্ঠ অবধি পৌঁছায় না। শুকনো বাতাসের মধ্য দিয়ে পড়ার সময় কিছু বৃষ্টির বিন্দু শুকিয়ে যায়। ভারগা নামে পরিচিত এই বৈশিষ্ট্যটি শুষ্ক মরুভূমি অঞ্চলে দেখা যায়।

বৃষ্টিপাত (Rainfall):

ভূ-পৃষ্ঠীয় জলভাগ থেকে সৃষ্ট জলীয় বাষ্প বায়ুর সংস্পর্শে এসে হালকা হয়ে উপরে উঠে ক্রমশ সম্পৃক্ত হয়ে অতিরিক্ত শীতলতার সংস্পর্শে এসে ঘনীভূত হয়ে জলকনায় পরিনত হলে তা ফোঁটা ফোঁটা আকারে পৃথিবীর বুকে নেমে আসে, তখন তাকে বৃষ্টিপাত বলে। জলীয় বাষ্প অতিরিক্ত শীতলতার সংস্পর্শে এসে ঘনীভূত হয়ে মেঘরূপে আকাশে ভেসে বেরায়, কিন্তু সব মেঘ থেকে বৃষ্টি হয় না। বৃষ্টিপাত হওয়ার জন্য দুটি বিষয়ের প্রয়োজন হয় – জলীয় বাষ্পপূর্ন বায়ুর উপস্থিতি এবং এই জলীয় বাষ্প কে ধারন করার জন্য় বাতাসে ভাসমান ধূলিকনার উপস্থিতি। এই দুটি কারনের সাথে সাথে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন কারণ হল বায়ুর ঊর্ধ্বগমন তথা বায়ুর ওপরে ওঠার প্রবনতা।

জলীয় বাষ্প পূর্ন আর্দ্র বায়ু ক্রমশ হালকা হয়ে ওপরে উঠে যায় এবং ওপরে উঠে শীতলতার সংস্পর্শে এসে ঘনীভূত হয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলকনায় পরিনত হয়ে বাতাসে ভাসমান অতি ক্ষুদ্র ধূলিকনা কে আশ্রয় করে মেঘ রূপে ভেসে বেরাতে থাকে। এই মেঘস্থিত জলকনা গুলি পরস্পরের সাথে মিলিত হয়ে ক্রমশ বড়ো জলকনায় পরিনত হতে থাকে এবং এক সময় এই জলকনা গুলি ভেসে থাকার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষন শক্তির প্রভাবে জলবিন্দু রূপে ঝরে পরে। এইভাবেই সাধারণত বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে।

বৃষ্টি ও বৃষ্টিপাতের মধ্যে পার্থক্যঃ

ফোঁটাগুলি যথেষ্ট পরিমাণে ভারি হলে তা পৃথিবীর বুকে ঝরে পড়ে – একেই বলে বৃষ্টি। বৃষ্টি ও বৃষ্টিপাতের মধ্যে পার্থক্য নিচে আলোচনা করা হয়েছে-

১। ফোঁটাগুলি যথেষ্ট পরিমাণে ভারি হলে তা পৃথিবীর বুকে ঝরে পড়ে – একেই বলে বৃষ্টি। অন্যদিকে, অতিরিক্ত শীতলতার সংস্পর্শে এসে ঘনীভূত হয়ে জলকনায় পরিনত হলে তা ফোঁটা ফোঁটা আকারে পৃথিবীর বুকে নেমে আসে, তখন তাকে বৃষ্টিপাত বলে।

২। বৃষ্টি হ’ল বোঁটার আকারে একটি তরল জল যা বায়ুমণ্ডলীয় জলীয় বাষ্প থেকে ঘনীভূত হয় এবং পরে বৃষ্টিপাত করে। অন্যদিকে, বৃষ্টিপাত মহাকর্ষের অধীনে বায়ুমণ্ডলীয় জলীয় বাষ্পের ঘনীভবনের একটি পণ্য।

৩। বৃষ্টিপাতের জন্য প্রথমেই দরকার পড়ে জলীয় বাষ্প, সেই জলীয় বাষ্প হালকা হওয়ার কারণে উপরে উঠে গিয়ে বাতাসের ধূলিকণা, বালুর কণা ইত্যাদির সহায়তায় জমাটবদ্ধ হয়ে তৈরি করে মেঘ। এভাবে মেঘের আকৃতি বড় হতে হতে যখন ভারি হয়ে যায়, তখন হয় বৃষ্টি। অন্যদিকে, বৃষ্টিপাত তখন ঘটে যখন বায়ুমণ্ডলের একটি অংশ জলীয় বাষ্পে স্যাচুরেট হয়ে যায়, যাতে জল ঘন হয়ে যায় এবং “বৃষ্টিপাত” হয়। সুতরাং, কুয়াশা এবং কুয়াশা বৃষ্টিপাত নয় বরং স্থগিতাদেশ, কারণ জলীয় বাষ্পটি বৃষ্টিপাতের পক্ষে যথেষ্ট পরিমাণে ঘনীভূত হয় না।

৪। উৎসবের দিক থেকে, বৃষ্টিকে স্ট্রাটাস মেঘ থেকে আসে। অন্যদিকে, বৃষ্টি সাধারণত কয়মুলস মেঘ গঠন থেকে আসে।

Exit mobile version