লাল পাকু ও লাল পিরানহা মাছের মধ্যে পার্থক্য

লাল পাকুঃ

“লাল পাকু” হ’ল বিভিন্ন প্রজাতির মিষ্টি পানির মাছ স্থানীয় আমেরিকাতে বোঝায়, যা সাবফ্যামিলি সেরাসালমিনিয়ের অংশ, যার মধ্যে পিরানহা এবং রৌপ্য ডলারও রয়েছে। “পাকু” শব্দটি ব্রাজিলিয়ান ভারতীয় ভাষা টুপি-গ্যারান্টি থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ “দ্রুত ভক্ষণকারী”। উত্তর আমেরিকার অ্যাকোয়ারিয়াম বাণিজ্যে কলসোমা জেনাসের পাকু মাছ জনপ্রিয় এবং এটি “নিরামিষ পাইরাণা” নামেও পরিচিত। পাকু কলসোমা, পাইরে্যাকটাস এবং অসুবটাস সহ নয়টি জেনারেট মাছকে বোঝায়। পোষা প্রাণীর দোকানে প্রায়শই বিক্রি হওয়া মাছ হ’ল কোলোসোমা ম্যাক্রোপোম বা কালো প্যাকু এবং কোলোসোমা ব্র্যাচাইপোম, বা লাল-পেটযুক্ত প্যাকু। দক্ষিণ আমেরিকার “টাম্বাকুই” নামেও পরিচিত, কালো প্যাকু হ’ল সাবফ্যামিলি সেরালাসালমিনিতে বৃহত্তম প্রজাতি। বিপন্ন ওসুবটাস জিংসুয়েন্স ব্রাজিলের জিংগু নদীতে সর্বাধিক স্থানীয়, যখন পাইরে্যাকটাস মেসোপটেমিকাস প্যারাগুয়ে-পারাণা নদীর অববাহিকার স্থানীয়।

লাল পিরানহাঃ

পিরানহা মাছ একটি ভয়ঙ্কর শিকারি মাছ। আফ্রিকার বিভিন্ন নদীতে এই পিরানহা মাছ পাওয়া যায়। সারা পৃথিবী জুড়েই এই পিরানহা মাছ নিয়ে নানান ধরনের কাহিনী ছড়িয়ে রয়েছে। পিরানহা মাছ সম্পর্কে একটি কথা রয়েছে এরা নাকি জলজ্যান্ত একটি আস্ত ঘোড়াকে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে খেয়ে শেষ করে ফেলতে পারে। এরা দলে দলে ঘুরে বেড়ায়। এরা এদের আয়তনের চেয়ে অনেক বড় প্রাণী কে তাদের শিকারে পরিণত করতে পারে। তবে পিরানহা শুধু মাংসাশী প্রাণী নয়। এরা মূলত সর্বভুক প্রাণী। এরা মূলত আফ্রিকার বিভিন্ন মিষ্টি পানির নদীগুলোতে বসবাস করে। তবে এখন শুধুমাত্র আফ্রিকাই নয় আরো অন্যান্য অনেক দেশের আবহাওয়ায় পাওয়া যায়। মূলত এরা স্বাদু পানির মাছ হলো এদের কিছু প্রজাতি সামুদ্রিক লবণাক্ত পরিবেশে বাস করে। অ্যামাজন বনাঞ্চলের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রায় সকল নদিতেই এদের দেখতে পাওয়া যায়।

লাল পাকু ও লাল পিরানহা মাছের মধ্যে পার্থক্যঃ

“লাল পাকু” হ’ল বিভিন্ন প্রজাতির মিষ্টি পানির মাছ স্থানীয় আমেরিকাতে বোঝায়, যা সাবফ্যামিলি সেরাসালমিনিয়ের অংশ। লাল পাকু ও লাল পিরানহা মাছের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। লাল পাকুর দাঁত অনেকটা মানুষের দাঁতে মত চতুর্ভূজাকার, ভোঁতা ও সোজা। অন্যদিকে লাল পিরানহার দাঁত ত্রিভূজাকার, তীর্যক, বাহিরের প্রান্ত সুতীক্ষ্ণ ও রেজরের মত ধারালো।

২। লাল পাকুর দাঁত দুই বা ততোধিক সারিতে থাকে। অন্যদিকে লাল পিরানহার দাঁত এক সারিতে থাকে।

৩। লাল পাকু নিচের চোয়াল তুলনামূলক কম স্থূল ও কম মাংসল। অন্যদিকে লাল পিরানহার নিচের চোয়াল তুলনামূলকভাবে অনেক বেশী স্থূল ও মাংসল।

৪। লাল পাকু সর্বভুক (Omnivorous) অর্থাৎ এরা উদ্ভিদ ও প্রাণী উভয় প্রকারের খাবারই খেয়ে থাকে, তবে প্রধানত উদ্ভিদভোজী (Herbivorous)। শান্ত প্রকৃতির। অন্যদিকে লাল পিরানহা সম্পূর্ণভাবে মাংসাশী (Carnivorous) অর্থাৎ এরা কেবলমাত্র প্রাণীজাতীয় খাবার খেয়ে থাকে। হিংস্র ও শিকারি প্রকৃতির।

৫। লাল পাকুর পরিপাকনালীর দৈর্ঘ্য তার মোট দৈর্ঘ্যের প্রায় তিন গুণ। অন্যদিকে লাল পিরানহার পরিপাকনালীর দের্ঘ্য তার মোট দৈর্ঘ্যের প্রায় সমান।