বাক্য ও বচনের মধ্যে পার্থক্য

বাক্য:

এক বা একাধিক বিভক্তিযুক্ত পদের দ্বারা যখন বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায়, তখন তাকে বাক্য বলে। অথবা যে সুবিন্যস্ত পদসমষ্টি দ্বারা কোনো বিষয়ে বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণরুপে প্রকাশিত হয়, তাকে বাক্য বলে। যেমন: মারিয়া আরমানকে ভালোবাসে। তারা একে অপরকে বিভিন্ন কাজে সহায়তা করে।

কতগুলো পদের সমষ্টিতে বাক্য গঠিত হলেও যে কোনো পদসমষ্টিই বাক্য নয়। বাক্যের বিভিন্ন পদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বা অন্বয় থাকা আবশ্যক। এ ছাড়াও বাক্যের অন্তর্গত বিভিন্ন পদ দ্বারা মিলিতভাবে একটি অখণ্ডভাব পূর্ণ রুপে প্রকাশিত হওয়া প্রয়োজন, তবেই তা বাক্য হবে। বাক্য হল যোগ্যতা, আকাঙ্ক্ষা, আসত্তি সম্পন্ন পদসমষ্টি, যা বক্তার মনের ভাব সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করে।

বচন:

’বচন’ ব্যাকরণের একটি পারিভাষিক শব্দ । বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের সংখ্যার ধারণা প্রকাশের উপায় বা সংখ্যাত্মক প্রকাশের উপায়কে বচন বলে। অর্থাৎ বিশেষ্য বা সর্বনাম পদ যে ব্যক্তি, বস্ত্ত বা প্রাণীর প্রতিনিধিত্ব করছে বা বোঝাচ্ছে, সেই ব্যক্তি, বস্তু বা প্রাণীর সংখ্যা, অর্থাৎ সেটি এক সংখ্যক না একাধিক সংখ্যাক, তা বোঝানোর পদ্ধতিকেই বচন বলে। বচন ২ প্রকার- একবচন ও বহুবচন।

বাক্য ও বচনের মধ্যে পার্থক্য:

এক বা একাধিক বিভক্তিযুক্ত পদের দ্বারা যখন বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায়, তখন তাকে বাক্য বলে। বাক্য ও বচনের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। এক বা একাধিক বিভক্তিযুক্ত পদের দ্বারা যখন বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায়, তখন তাকে বাক্য বলে। অন্যদিকে, বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের সংখ্যার ধারণা প্রকাশের উপায় বা সংখ্যাত্মক প্রকাশের উপায়কে বচন বলে।

২। বাক্য হলো অর্থ যুক্ত শব্দ বা শব্দের সমষ্টি। অন্যদিকে, বচন হল দুটি পদের মধ্যে সম্বন্ধের স্বীকৃতি বা অস্বীকৃতি।

৩। বাক্যের দুটি অংশে থাকে। যথা -উদ্দেশ্য ও বিধেয়। অন্যদিকে, বচনের চারটি অংশ থাকে। যথা- পরিমাণ, উদ্দেশ্য, বিধেয় ও সংযোজক।

৪। বাক্যের নির্দিষ্ট কোন আকার নেই।যেমন -যাও, তুমি যাও ,তুমি নিয়ে যাও ইত্যাদি। অন্যদিকে, বচনের নির্দিষ্ট আকার আছে। যেমন- কোনো কোনো মানুষ হয় শিল্পী। কোনো মানুষ নয় অমর ইত্যাদি।

৫। বাক্য অতীত,বর্তমান,ভবিষ্যৎ যে কোন কালের হয়। যেমন- রাম রাজা ছিলেন (অতীত)। অন্যদিকে, বচন কেবলমাত্র বর্তমানকালের হয় ।যেমন- রাম হয় ব্যক্তি যিনি রাজা ছিলেন।

৬। বাক্যের ব্যাপ্তি বচন এর থেকে বেশি। অন্যদিকে, বচন এর ব্যপ্তি বাক্যের থেকে কম।

৭। বাক্যে গুণ পরিমাণ এর উল্লেখ থাকে না। অন্যদিকে, বচনে গুণ ও পরিমাণ অবশ্যই উল্লেখ থাকবে।