হার্ট অ্যাটাক ও হার্ট ফেইলিয়রের মধ্যে পার্থক্য

হার্ট অ্যাটাক (Heart attack):

হার্ট অ্যাটাকের আরেক নাম ” Myocardial Infarction” এখানে myo হলো muscle. আর Cardiac হলো হৃৎপিন্ড সম্পর্কিত। সুতরাং Myocardial = হৃৎপেশী।Infarction বলতে বোঝায় অপর্যাপ্ত রক্ত প্রবাহের কারণে টিস্যুর মৃত্যু। Myocardial Infarction = অপর্যাপ্ত রক্ত প্রবাহের কারণে হৃৎপেশীর মৃত্যু। হার্ট অ্যাটাক বা হৃৎপেশীর রক্তাভাবজনিত মৃত্যু বা হৃদাঘাত হল হৃৎপিণ্ডের ধমনীর রক্তপ্রবাহে বিভিন্ন কারণে অবরোধ হয়ে হৃৎপিণ্ডের দেওয়ালের কোনো অংশের টিস্যুর মৃত্যু। একে ইংরেজিতে চিকিৎসা বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় “Myocardial Infarction” ও কথ্য ইংরেজি ভাষায় “হার্ট অ্যাট্যাক” বলে।

প্রবল হৃৎযন্ত্রণা কয়েকটি বিশেষ ইসিজি পরিবর্তন, ও কয়েকটি রক্ত পরিক্ষার দ্বারা হৃদরোগ নির্ধারন করা হয়। অনেক সময় সাময়িক ব্যাথার পরে রক্তপ্রবাহ পুনরায় ফিরে এলে হৃৎপেশীর সম্পূর্ণ মৃত্যু না হয়ে থাকতে পারে এবং সেক্ষেত্রে তাকে হৃৎপেশীর মৃত্যু না বলে ক্ষণস্থায়ী বক্ষযন্ত্রণা বা অ্যানজাইনা বলা হয়।

হার্ট ফেইলিয়র (Heart failure):

হৃৎপিণ্ডের ফেইলিয়র, যা ইংরেজিতে (Heart failure) (HF), কনজেসটিভ হার্ট ফেইলিওর (CHF), ডিকম্পেনসেটিও কর্ডিস (DC) এবং কনজেসটিভ কার্ডিয়াক ফেইলিউর (CCF) নামেও পরিচিত হলো এমন একটি অবস্থা যখন হৃৎপিণ্ড, বিপাকের জন্য প্রয়োজনীয় রক্ত দেহকলাতে সরবরাহ করতে পারে না। হার্ট ফেইলিয়রের লক্ষণগুলির মধ্যে সাধারণত শ্বাসকষ্ট, অতিরিক্ত ক্লান্তি এবং পা ফোলা অন্তর্ভুক্ত । সাধারণত ব্যায়ামের সময় বা শুয়ে থাকার সময় শ্বাসকষ্ট আরও খারাপ হয় এবং রাতে ব্যক্তিকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলতে পারে । ব্যায়াম করার ক্ষমতা কমে যাওয়া একটি সাধারণ লক্ষণ। উল্লেখ্য অ্যানজিনা এবং বুকের ব্যথা সাধারণত হার্ট ফেইলিয়রের কারণে ঘটে না।

হার্ট ফেইলিয়রের সাধারণ কারণগুলির মধ্যে হৃৎ-ধমনীর ব্যাধি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যার মধ্যে পূর্ববর্তী মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন (হার্ট অ্যাটাক), উচ্চ রক্তচাপ, অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন, হৃৎপিণ্ডের কপাটিকার রোগ, অতিরিক্ত অ্যালকোহলের ব্যবহার, সংক্রমণ এবং কোনও অজানা কারণে কার্ডিওমিওপ্যাথি রয়েছে। এগুলি হৃৎপিণ্ডের কাঠামো বা কার্যকারিতা পরিবর্তন করে হার্ট ফেইলিউর সৃষ্টি করে।

হার্ট অ্যাটাক ও হার্ট ফেইলিয়রের মধ্যে পার্থক্যঃ

হৃৎপিণ্ডের ফেইলিয়র, যা ইংরেজিতে (Heart failure) (HF), কনজেসটিভ হার্ট ফেইলিওর (CHF), ডিকম্পেনসেটিও কর্ডিস (DC) । হার্ট অ্যাটাক ও হার্ট ফেইলিয়রের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। ইংরেজিতে চিকিৎসা বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় হার্ট অ্যাটাকের আরেক নাম ” Myocardial Infarction” এখানে myo হলো muscle. আর Cardiac হলো হৃৎপিন্ড সম্পর্কিত। অন্যদিকে, হৃৎপিণ্ডের ফেইলিয়র, যা ইংরেজিতে (Heart failure) (HF), কনজেসটিভ হার্ট ফেইলিওর (CHF), ডিকম্পেনসেটিও কর্ডিস (DC) এবং কনজেসটিভ কার্ডিয়াক ফেইলিউর (CCF) নামেও পরিচিত

২। হার্ট অ্যাটাক বা হৃৎপেশীর রক্তাভাবজনিত মৃত্যু বা হৃদাঘাত হল হৃৎপিণ্ডের ধমনীর রক্তপ্রবাহে বিভিন্ন কারণে অবরোধ হয়ে হৃৎপিণ্ডের দেওয়ালের কোনো অংশের টিস্যুর মৃত্যু। অন্যদিকে, হার্ট ফেইলিয়র এমন একটি অবস্থা যখন হৃৎপিণ্ড, বিপাকের জন্য প্রয়োজনীয় রক্ত দেহকলাতে সরবরাহ করতে পারে না।

৩। হার্ট ফেইলিওয়রের আরেকটি ধরন হলো, যখন হৃদপিণ্ডের পেশি শক্ত হয়ে যায় ও শিথিল করতে অক্ষম হয়। অন্যদিকে, হার্ট অ্যাটাক হয় যখন হার্টে রক্ত সরবরাহে বাঁধা থাকে।

৪। হার্ট অ্যাটাকের আগে একেকজনের শরীরে ভিন্ন ভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। তবে সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ হলো হাঁটতে গিয়ে বুকে চাপ। অনেকেই এই ব্যথাকে গ্যাসের সমস্যা ভেবে ভুল করেন। তাছাড়াও রাতে ঘুমের মধ্যে বুকে চাপ, হঠাৎ ঘুম ভেঙে গিয়ে আর ঘুম না আসা, ঘুম থেকে উঠে সকালে শরীর খারাপ লাগা, বুক ধড়ফড়, শ্বাস নিতে সমস্যা, ক্লান্ত লাগা ইত্যাদি।

অন্যদিকে, হার্ট ফেলিওরের ঝুঁকি আগে থেকেই কিছুটা টের পাওয়া যায়। প্রাথমিক উপসর্গের মধ্যে থাকে শ্বাসকষ্ট, গোড়ালি ও পেট ফুলে যাওয়া, ক্লান্তি ও খিদে কমে যাওয়া।

৫। হার্ট অ্যাটাকের পরে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করলে হার্টকে দুর্বলতার হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব। এ ক্ষেত্রে নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ জরুরি। অনিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ, চিকিৎসা গ্রহণ না করারই শামিল। হার্ট অ্যাটাক-পরবর্তী সময়ে অনেকেই হার্টে রিং পরে থাকতে পারেন। যদি আপনি রিং পরেন অথবা বাইপাস অপারেশন করেন অথবা কোনোটিই না করে থাকেন, সবক্ষেত্রের উপযুক্ত মেডিসিন চিকিৎসা (Non invasive কাটাছেঁড়াবিহীন চিকিৎসা) গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক।

অন্যদিকে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে হার্ট ফেলিওর নিরাময় করা যায় না। নিয়ন্ত্রণই হচ্ছে এর চিকিৎসা। সুতরাং জীবন ধারা পরিবর্তন, ওষুধ ডিভাইস বা হার্ট ফাংশন উন্নতকরণ, সার্জারিসহ একটি সমন্বিত চিকিৎসা ব্যবস্থাই দিতে পারে রোগীকে সুস্থ জীবন।