মাইক্রোফোন ও স্পিকার এর মধ্যে পার্থক্য

মাইক্রোফোন (Microphone) :
মাইক্রোফোন এক ধরনের যন্ত্র, যাকে কথ্য ভাষায় মাইক ও বলা হয়ে থাকে। এটি এক ধরনের সেন্সর হিসেবে কাজ করে, যা শব্দ শক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তর করে। ফলে তারের মাধ্যমে সংবাহন সম্ভব হয়। মাইক্রোফোনগুলি ব্রডকাস্টিং, সঙ্গীত রেকর্ডিং, পাবলিক স্পিকিং এবং টেলিফোনি সহ বিস্তৃত অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে ব্যবহৃত হয়। মাইক্রোফোন শব্দ তরঙ্গকে বৈদ্যুতিক প্রবাহে রূপান্তর করে কাজ করে, যা তারপরে এমপ্লিফায়েড বা রেকর্ড করা যায়।

ডায়নামিক, কনডেন্সার এবং রিবন সহ বিভিন্ন ধরণের মাইক্রোফোন রয়েছে। ডাইনামিক মাইক্রোফোনগুলো রগড এবং সাধারণত লাইভ সাউন্ড রিইনফোর্সমেন্টে ব্যবহৃত হয়, যখন কনডেনসার মাইক্রোফোনগুলো বেশি সেনসিটিভ এবং প্রায়ই স্টুডিও রেকর্ডিং অ্যাপ্লিকেশনে ব্যবহৃত হয়। রিবন মাইক্রোফোন অন্য ধরনের যা তাদের উষ্ণ, ভিনটেজ সাউন্ড গুণমানের জন্য পরিচিত।

স্পিকার (Speaker) :
স্পিকার হচ্ছে কম্পিউটারের একটি আউটপুট ডিভাইস। কম্পিউটারে শব্দ শােনার জন্য স্পিকার ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে মাল্টিমিডিয়া পিসির অন্যতম অংশ হলাে স্পিকার। অনেক পিসিতে বিল্ট ইন সাউন্ড প্রসেসর ও স্পিকার থাকে। বেশিরভাগ ব্যবহারকারী এক্সটারনাল স্পিকার ব্যবহার করে থাকেন। কারণ এগুলাের অডিও মান অত্যন্ত ভালাে হয় এবং এমপ্লিফায়ার যুক্ত থাকে ফলে হাতে ধরে ভলিউম নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বর্তমানে ভালাে মানের সাউন্ডের জন্য অনেকে উচ্চমূল্যের সাবওয়েফার এবং থ্রিডি সারাউন্ডেড সাউন্ড স্পিকার ব্যবহার করে থাকেন। কম্পিউটারের ক্যাসিং এর পেছনে সাউন্ড কার্ডের জ্যাকে স্পিকারের ইনপুট জ্যাক লাগাতে হয়।

স্পিকার প্রথমে কম্পিউটারের অডিও রিসিভার এর দ্বারা ইনপুট গ্রহণ করে এবং এরপর সেই ইনপুটকে স্পিকার বা ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক তরঙ্গ কে ধ্বনি তরঙ্গে পরিবর্তন করে। ইনপুট দুই ধরনের হয় একটি হলো অ্যানালগ এবং অপরটি ডিজিটাল

মাইক্রোফোন ও স্পিকার এর মধ্যে পার্থক্যঃ
মাইক্রোফোন এবং স্পিকার হলো দুটি আলাদা ধরণের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস যা শব্দ সংগ্রহ এবং প্রকাশ করতে ব্যবহৃত হয়। এই দুটি ডিভাইসের মধ্যে কিছু প্রধান পার্থক্য রয়েছে নিম্নরূপ-

১. একটি মাইক্রোফোন একটি শক্তি রূপান্তর ডিভাইস যা শব্দ সংকেতকে বৈদ্যুতিক সংকেতে রূপান্তর করে, যা আপনার বক্তৃতার শব্দ তুলতে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে, স্পিকার হল এক ধরনের ট্রান্সডিউসার যা বৈদ্যুতিক সংকেতকে শব্দ সংকেতে রূপান্তরিত করে, এটি এমন বৈদ্যুতিক সংকেত যা অন্য দিকেকে বাজানোর জন্য শব্দে পরিণত করে।

২. মাইক্রোফোন শব্দ বা কোনো ধরণের শব্দের তৈরি হতে সক্ষম। এটি আবশ্যক শব্দ বা ধরণের সংবাদ বা স্বর সংগ্রহ করতে সক্ষম থাকে। অন্যদিকে, স্পিকার শব্দ বা সংগীত প্রকাশ করতে সক্ষম। এর ক্ষমতা উচ্চ হতে পারে যাতে বড় এলাকার মানুষের কাছেও ভাল কোণে শব্দ পৌঁছাতে পারে।

৩. মাইক্রোফোন সংগ্রহের সময়ে শব্দগুলি একত্রিত করে এবং এটি একটি ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যালে রূপান্তর করে। অন্যদিকে, স্পিকার একটি ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যাল প্রাপ্ত করে এবং এটি শব্দে রূপান্তর করে যাতে এটি শ্রণীত হতে পারে।

৪. মাইক্রোফোনের কাজ হল শব্দ সংগ্রহ করা। অন্যদিকে, স্পিকারের কাজ হল শব্দ বাজানো।

৫. মাইক্রোফোনের ডায়াফ্রাম থাকে আর এই ডায়াফ্রাম, যা শব্দের কম্পনকে তড়িতে রূপান্তরের জন্য ডিজাইন করা থাকে । বিভিন্ন রকমের শব্দের কম্পন ডায়াফ্রামকে বিভিন্নভাবে কম্পিত করে।

অন্যদিকে, স্পিকারে থাকে একটি স্থায়ী চুম্বক। যা শব্দ থেকে তৈরি প্রতিবর্তী তড়িৎপ্রবাহ এ কয়েলের সাথে সংযুক্ত করা হয় , তখন স্থির ক্ষেত্র (চৌম্বক ক্ষেত্র) ও চলক্ষেত্রের (Moving field) মধ্যে মিথস্ক্রিয়া ঘটে, ফলে কয়েলটি অগ্র পশ্চাৎ যাওয়া আসা করে । এতে বায়ুতে সংকোচন প্রসারণ ঘটে , ফলে শব্দের সৃষ্টি হয় ।