মাল্টিন্যাশনাল (Multinational):
মাল্টিন্যাশনাল বা বহুজাতিক এমন একটি কর্পোরেশন যার নিজস্ব দেশ ছাড়া এক বা একাধিক দেশে সম্পদ ও সুবিধা রয়েছে এবং এর একটি কেন্দ্রীভূত অফিস রয়েছে যেখানে বিশ্বব্যাপী ব্যবস্থাপনার সমন্বয় করা হয়। সহজ কথায় মাল্টিন্যাশনাল কর্পোরেশন বা কোম্পানিগুলি একাধিক দেশে কাজ করে এবং এর একটি কেন্দ্রীভূত ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি রয়েছে। মাল্টিন্যাশনালের একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ বিশ্বব্যাপী সমস্ত সহায়ক সংস্থাকে প্রভাবিত করে। সাধারণত ব্যবসায়ীক ক্ষেত্রে এই শব্দটি বেশি প্রচলিত।
ট্রান্সন্যাশনাল (Transnational):
ট্রান্সন্যাশনাল হল একটি কর্পোরেশন যা বিভিন্ন দেশে কাজ করে। সাধারণত নিজ দেশ ব্যতীত তাদের কেন্দ্রীভূত ব্যবস্থাপনা থাকে, অর্থাৎ এটি অপারেটিং জোন অনুসারে সিদ্ধান্ত নেয়। মোটকথা ট্রান্সন্যাশনাল কোম্পানিগুলোর সারা বিশ্বে অনেক কর্পোরেশন বা কোম্পানি আছে কিন্তু তাদের কোনো কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি নেই। যেহেতু ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা কেন্দ্রীভূত নয় তাই অন্যান্য দেশে পরিচালিত অনুরূপ প্রতিষ্ঠান গুলোকে সহায়ক হিসাবে ধরা হয় না।
ট্রান্সন্যাশনাল কোম্পানিগুলি অপারেটিং দেশের মূল্য ব্যবস্থার প্রতি অনুগত নয়, তবে ব্যবসা সম্প্রসারণের দিকে মনোনিবেশ করে থাকে।
মাল্টিন্যাশনাল এবং ট্রান্সন্যাশনালের মধ্যে পার্থক্যঃ
মাল্টিন্যাশনাল এবং ট্রান্সন্যাশনালের মধ্যে স্পষ্ট সাদৃশ্য হলো, উভয়েরই বিদেশী সহযোগী রয়েছে এবং বিশ্বব্যাপী কাজ করে। মাল্টিন্যাশনাল এবং ট্রান্সন্যাশনালের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-
১। মাল্টিন্যাশনাল এমন একটি কর্পোরেশনকে বোঝায় যেটির নিজস্ব দেশ ব্যতীত এক বা একাধিক দেশে সম্পদ এবং সুবিধা রয়েছে এবং একটি কেন্দ্রীভূত অফিস রয়েছে যেখানে বিশ্বব্যাপী ব্যবস্থাপনা সমন্বিত হয়। অন্যদিকে, ট্রান্সন্যাশনাল বলতে এমন একটি কর্পোরেশনকে বোঝায় যা নিজ দেশ ব্যতীত অন্যান্য দেশে কাজ করলেও তাদের কেন্দ্রীভূত ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা থাকে না।
২। যদিও মাল্টিন্যাশনালদের অন্যান্য দেশে সহায়ক সংস্থা রয়েছে, অন্যদিকে একটি ট্রান্সন্যাশনালের অন্যান্য দেশে সহায়ক সংস্থা নেই বা সাবসিডিয়ারি নেই কিন্তু অনেক কোম্পানী আছে।
৩। একটি মাল্টিন্যাশনাল ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ নিজ দেশে করা হয় এবং বিশ্বব্যাপী সমস্ত সহায়ক সংস্থাগুলিতে কার্যকর করা হয়। অন্যদিকে, একটি ট্রান্সন্যাশনাল সিদ্ধান্ত গ্রহণ পৃথক ট্রান্সন্যাশনাল কর্পোরেশন দ্বারা করা হয়।
৪। স্থানীয় বাজারের ক্ষেত্রে মাল্টিন্যাশনালদের বিধিনিষেধের সম্মুখীন হতে হয় কারণ তাদের কেন্দ্রীভূত ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি রয়েছে। অন্যদিকে, স্থানীয় বাজারের উপর ভিত্তি করে ট্রান্সন্যাশনাল কোম্পানিগুলো স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।