প্রকৃত এবং কোলয়ডীয় দ্রবণের মধ্যে পার্থক্য

প্রকৃত এবং কোলয়ডীয় দ্রবণ দুটি ভিন্ন ধরণের দ্রবণ। প্রকৃত এবং কোলয়ডীয় দ্রবণের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। নিচে প্রকৃত এবং কোলয়ডীয় দ্রবণের মধ্যে পার্থক্য দেখানো হয়েছে-

প্রকৃত দ্রবণ (True Solution) :
কোন দ্রাবকে কোনো দ্রবের কণাগুলো 10-8 cm বা 0.1 nm ব্যাসের অথবা আরো ক্ষুদ্র কণায় বিয়োজিত হয়ে দ্রাবকের সাথে মিশে স্বচ্ছ, সমসত্ব ও সুস্থিত স্থায়ী মিশ্রণ উৎপন্ন করে, এ মিশ্রণ থেকে দ্রবের কণাগুলো অতি সহজেই ফিল্টার কাগজ বা পার্চমেন্ট কাগজের মধ্যদিয়ে খুব সহজেই যেতে পারে তবে এ সমসত্ত্ব, স্বচ্ছ ও স্থায়ী মিশ্রণকে প্রকৃত দ্রবণ বলা হয়। প্রকৃত দ্রবণের উদাহরণ: লবণ জল, চিনি জল, অ্যাসিড দ্রবণ।

কোলয়ডীয় দ্রবন (Colloidal Solution)
যখন কোনো দ্রাবকের মধ্যে কোনো দ্রবের কণাগুলো 1 ন্যানোমিটার – 1 মাইক্রোমিটার এর ব্যাসের ক্ষুদ্র কণায় বিভাজিত হয়ে একটি অস্বচ্ছ, অসমসত্ত্ব কিন্তু স্থায়ী মিশ্রণ উৎপন্ন করে তখন সেই মিশ্রণকে কোলয়ডীয় দ্রবণ বলে। কোলয়ডীয় দ্রবণের মিশ্রণ থেকে ঘরের কণাগুলো ফিল্টার কাগজের মধ্যদিয়ে যেতে পারে কিন্তু পার্চমেন্ট কাগজ বা প্রাণীজ বা উদ্ভিজ্জ ঝিল্লি ইত্যাদি অর্ধভেদ্য পর্দার মধ্যদিয়ে যেতে পারে না। কোলয়ডীয় দ্রবণও বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যেমন খাদ্য, প্রসাধনী, ঔষধ। কোলয়ডীয় দ্রবণের উদাহরণ: দুধ, কুয়াশা, রক্ত, স্টার্চ দ্রবণ

প্রকৃত এবং কোলয়ডীয় দ্রবণের মধ্যে পার্থক্য:
১. প্রকৃত দ্রবণে দ্রাবক এবং দ্রবীভূত পদার্থের অণু সম্পূর্ণভাবে মিশে যায়। অন্যদিকে, কোলয়ডীয় দ্রবণে দ্রাবক এবং দ্রবীভূত পদার্থের কণা সম্পূর্ণভাবে মিশে না।

২. প্রকৃত দ্রবণে দ্রবীভূত পদার্থ দৃশ্যমান হয় না। অন্যদিকে, কোলয়ডীয় দ্রবণে দ্রবীভূত পদার্থ দৃশ্যমান হতে পারে।

৩. প্রকৃত দ্রবণে কণার আকার 10^(-9) মিটারের চেয়ে ছোট। অন্যদিকে, কোলয়ডীয় দ্রবণে কণার আকার 10^(-9) মিটার থেকে 10^(-6) মিটার পর্যন্ত।

৪. প্রকৃত দ্রবণে Tyndall effect দেখা যায় না। অন্যদিকে, কোলয়ডীয় দ্রবণে Tyndall effect দেখা যায়।

৫. কোলয়ডীয় দ্রবণের কণার আকার প্রকৃত দ্রবণের কণার আকারের চেয়ে বড়।

৬. প্রকৃত দ্রবণ তৈরি করা সহজ, কিন্তু কোলয়ডীয় দ্রবণ তৈরি করা কঠিন।

৭. প্রকৃত দ্রবণ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যেমন রসায়ন, জীববিজ্ঞান, ঔষধ। কোলয়ডীয় দ্রবণও বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যেমন খাদ্য, প্রসাধনী, ঔষধ।

৮. প্রকৃত দ্রবণের উদাহরণ: লবণ জল, চিনি জল, অ্যাসিড দ্রবণ। অন্যদিকে, কোলয়ডীয় দ্রবণের উদাহরণ: দুধ, কুয়াশা, রক্ত, স্টার্চ দ্রবণ।