Investor এবং Trader এর মধ্যে পার্থক্য

Investor এবং Trader এর মধ্যে মূল পার্থক্য হলো তাদের বিনিয়োগ কৌশল, সময়সীমা, এবং ঝুঁকি গ্রহণের ধরন। নীচে Investor এবং Trader এর মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করা হলো-

বিনিয়োগকারী (Investor) :
বিনিয়োগকারী হ’ল এমন ব্যক্তি যে ভবিষ্যতের আর্থিক লাভ বা সুবিধা (সুদ) অর্জনের প্রত্যাশায় মূলধন বরাদ্দ/বিনিয়োগ করে। এই বিনিয়োজিত মূলধনের মাধ্যমে বেশিরভাগ সময় বিনিয়োগকারীরা সম্পত্তি কিনে থাকেন। সাধারণত, বিনিয়োগের ধরনের মধ্যে রয়েছে মূলধন মজুদ, ঋণ, সিকিউরিটিজ, রিয়েল এস্টেট, অবকাঠামো, মুদ্রা, পণ্য, টোকেন, ডেরাইভেটিভস ভবিষ্যৎ চুক্তি, ফরোয়ার্ড ইত্যাদি।

এই সংজ্ঞা প্রাথমিক বাজার এবং গৌণ বাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কোনও পার্থক্য করে না। অর্থাৎ, যে ব্যক্তি ব্যবসায়ে মূলধন সরবরাহ করে এবং যে স্টক কিনে তারা উভয়ই বিনিয়োগকারী হিসেবে বিবেচ্য। যে বিনিয়োগকারীর কোন কোম্পানিতে মাত্র একটি শেয়ারের রয়েছে, তিনিও উক্ত কোম্পানির একজন মালিক।

ব্যবসায়ী (Trader) :
একজন ব্যবসায়ী পুরুষ বা ব্যবসায়ী মহিলা বা ব্যবসায়ী ব্যক্তি হল এমন ব্যক্তি যে ব্যবসায়িক খাতে জড়িত থেকে বিশেষত মানবসম্পদ, নগদ তহবিল, মেধা এবং শারীরিক শক্তি কাজে লাগিয়ে বাণিজ্যিক বা শিল্পখাতে উৎপাদন, নগদ প্রবাহ বা বিক্রয় সৃষ্টির মাধ্যমে আয় করে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করে।

“ব্যবসায়ী” শব্দটি বলতে একজন প্রতিষ্ঠাতা, মালিক বা একটি বাণিজ্যিক উদ্যোগের সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ারহোল্ডারদের বোঝানো হয়। শব্দটি দ্বারা মাঝে মাঝে কোন কর্পোরেশন, এন্টারপ্রাইজ, ফার্ম অথবা কোন সংস্থার একজন দেবদূত বিনিয়োগকারী বা অনানুষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীকেও বোঝানো হয়ে থাকে।

Investor এবং Trader এর মধ্যে পার্থক্যঃ
১. ট্রেডাররা মূলত স্বল্পমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য শেয়ার কিনে থাকেন এবং নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জন করার জন্য ঘন ঘন শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করেন। অন্যদিকে একজন ইনভেস্টর দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের দিকে অধিক গুরুত্ব দেন। তারা মূলধনী লাভের আশায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তাদের বিনিয়োগকৃত শেয়ার ধরে রাখেন।

২. একজন ট্রেডার স্বল্পমেয়াদী বিনিয়োগকারী হওয়ায় প্রতিনিয়ত শেয়ারের দামের ওঠানামার কারণে উচ্চ ঝুঁকির সম্মুখীন হন। অন্যদিকে, ইনভেস্টররা সাধারণত ঝুঁকি-বিমুখ হয়ে থাকেন। তারা দীর্ঘমেয়াদের জন্য শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেন, ফলে দৈনন্দিন বাজারের গতিবিধি সাধারণত তাদের বিনিয়োগ সিদ্ধান্তের উপর তেমন কোন প্রভাব ফেলতে পারে না।

৩. প্রতিনিয়ত শেয়ারের দামের ওঠানামার উপর ভিত্তি করে ট্রেডাররা শেয়ারবাজার থেকে মুনাফা করতে পারে। তাদের লক্ষ্য হলো কম দামে শেয়ার কিনে পরবর্তীতে দাম বাড়লে সেটি বিক্রি করা। তাই ট্রেডারদেরকে তাদের ট্রেড করার সর্বোত্তম সুযোগ চিহ্নিত করতে নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ করতে হয়।

অন্যদিকে, ইনভেস্টররা শেয়ারের মৌলিক উপাদানগুলোকে যথাযথভাবে বিশ্লেষণ করে দীর্ঘমেয়াদের জন্য তাতে বিনিয়োগ করেন। ইনভেস্টরদের লক্ষ্য হলো বিনিয়োগ থেকে দীর্ঘমেয়াদে সম্পদ সৃষ্টি।

৪. ট্রেডাররা ব্যাপক গবেষণা করে অধিক ঝুঁকি নিয়ে একটি নির্দিষ্ট ট্রেডিং পরিকল্পনায় অটল থাকেন। যখন বাজারের অবস্থা তাদের লক্ষ্যের বিপরীতে চলে যায় তখন তারা তাদের ট্রেডিং পরিকল্পনায় সংশোধন করেন।

অন্যদিকে, একজন ইনভেস্টরকে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করার কারণে যথেষ্ট ধৈর্যশীল হতে হয়। ইনভেস্টররা সাধারণত ট্রেডারদের থেকে তুলনামূলকভাবে কম ঝুঁকির সম্মুখীন হন।

৫. ট্রেডাররা মূলত প্রাইস চার্ট এবং অন্যান্য টুলস এর সাহায্যে টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে তাদের ট্রেডিং সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। ট্রেডিংয়ের সর্বোত্তম সুযোগগুলোকে গ্রহণ করার জন্য ট্রেডারদের সাধারণত খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

অন্যদিকে, শেয়ারে বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ইনভেস্টররা সাধারণত অনেক সময় নিয়ে থাকেন। তারা বিভিন্ন কোম্পানির মৌলিক বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে তাদের বর্তমান আর্থিক অবস্থা, ভবিষ্যতে প্ৰবৃদ্ধির সম্ভাবনা, সম্ভাব্য ব্যবসায়িক ঝুঁকি এবং অন্যান্য কারণগুলো চিহ্নিত করে সিকিউরিজের মূল্যায়ন করে থাকেন এবং সেই অনুযায়ী তাদের বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

৬. ট্রেডারদেরকে যথেষ্ট মুনাফা অর্জনের জন্য ঘন ঘন শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করতে হয়। তাই তাদের একাউন্টে সবসময় পর্যাপ্ত তহবিল থাকা জরুরি। তারা অনেকসময় ব্রোকারের থেকে মার্জিন লোনও গ্রহণ করে থাকেন।

অন্যদিকে, ইনভেস্টররা সাধারণত নিজ তহবিল থেকেই বিনিয়োগ করে থাকেন। যেহেতু তারা দীর্ঘ সময়ের জন্য তাদের বিনিয়োগে অটল থাকেন, তাই তাদের একাউন্টে সবসময় প্রচুর পরিমানে ফ্রি-ফান্ড থাকার দরকার হয় না।