জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা এর মধ্যে পার্থক্য

জ্ঞান (Knowledge):
জ্ঞান হলো তথ্য, তথ্যমূলক বুদ্ধিমত্তা এবং অবস্থানান্তর বুদ্ধির সংগ্রহ এবং জ্ঞাতব্য সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা। এটি যে কোন ধরনের তথ্য, তথ্য, অঙ্গীকার বা বুদ্ধিমত্তা থাকতে পারে, সেগুলি সংগ্রহ করার একটি প্রক্রিয়া বলা যেতে পারে। জ্ঞান আমাদের মধ্যে কাছাকাছি সংরক্ষিত হতে পারে এবং আমরা এটি বুদ্ধিমত্তা বা মনোবুদ্ধির মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারি।

প্রজ্ঞা (Wisdom):
প্রজ্ঞা হলো জ্ঞানের একটি উচ্চতর ধারণা, যা আমাদের জীবনের প্রাক্তন অভিজ্ঞতা, সামাজিক সম্পর্ক, নৈতিকতা, মূল তথ্য এবং বুদ্ধিমত্তা একত্রিত করে। প্রজ্ঞা আমাদের মানবিক এবং মৌলিক দৃষ্টিকোণ পরিবর্তন করতে সাহায্য করে, এটি আমাদের জীবনের মূল্য এবং উদ্দেশ্যের সাথে সংম্পর্কিত। প্রজ্ঞা আমাদের সাহায্য করে সঠিক নির্ণয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া, সমস্যার সমাধান করা, অশ্বশ্য সৃষ্টি করা এবং আমাদের একে অপরের সাথে ভাল সম্পর্ক উন্নত করার জন্য আমাদের সাথে রাখা যায়।

জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা এর মধ্যে পার্থক্যঃ

মোটামুটি, জ্ঞান আপনার জ্ঞাতব্য তথ্য এবং ধারণা সংগ্রহ করতে সাহায্য করে, যেখানে প্রজ্ঞা তা আপনার অভিজ্ঞতা, নৈতিকতা এবং বুদ্ধিমত্তা সহায্য করে। জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১. জ্ঞান শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ Knowledge, যার অর্থ হলাে জানা কোনাে বিষয় সম্পর্কে যখন আমাদের মনে সুস্পষ্ট ও সুশৃঙ্খল ধারণা জন্ম হয় তখন তাকে আমরা জ্ঞান বলি।

অন্যদিকে, গভীর শ্রদ্ধা, গভীর বিশ্বাস, বিনয়, নির্জনতা, স্থিরতা, পরম একাগ্রতা সহকারে প্রতক্ষ্য উপলব্ধি যুক্ত ব্যাক্তির জ্ঞান উপদেশ বা সাধন-সমাধির দ্বারা প্রতক্ষ্য উপলব্ধিজাত জ্ঞান যখন নির্মল অন্তরে প্রবেশ করে প্রাণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গভীর স্থিতি লাভ করে তখন তাকে প্রজ্ঞা বলে।

২. জ্ঞান বলতে বুঝায় কোনো কিছু সম্পর্কে সম্যক ধারণা করার মতো শক্তি বা বোধশক্তি। অন্যদিকে, প্রজ্ঞা বলতে বুঝায় জ্ঞানকে হৃদয়ঙ্গম করে, নিজের অভিজ্ঞতা দ্বারা এর সুফলকে, বাস্তবে প্রয়োগ করার মতো শক্তি।

৩. পুঁথিগত বিদ্যা থেকে জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব। কিন্তু প্রজ্ঞা অর্জন করা সম্ভব নয়। প্রজ্ঞা লাভ হয়।

৪. জ্ঞান সংগঠিত তথ্য ছাড়া কিছুই নয়। এটি তথ্যের আধিক্য সম্পর্কে নয়, তবে এটি প্রাসঙ্গিক হওয়া উচিত। অন্যদিকে, জ্ঞান ব্যবহারিক জীবনে জ্ঞান বাস্তবায়নের মান প্রজ্ঞা।

৫. একজন জ্ঞানী, প্রজ্ঞাবান না ও হতে পারেন, কিন্তু একজন প্রজ্ঞাবান, নিশ্চিতভাবেই জ্ঞানী। কারণ, জ্ঞান অর্জন ভিন্ন, প্রজ্ঞালাভ অসম্ভব।

৬. উদাহরণঃ তুমি জানো যে, ‘মদ’ বা ‘সিগারেট’ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এ ব্যাপারে তোমার যথেষ্ট জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও তুমি যদি তা বর্জন করতে না পারো- তাহলে ভাবতে হবে তোমার জ্ঞান আছে ঠিকই কিন্তু প্রজ্ঞা নেই। আর যদি তুমি মদ, সিগারেটের কুফল জানার পর তা ছেড়ে দিতে পারো- তাহলে বুঝবে- তোমার জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা দুটোই আছে।
আরও খোলাসা করে বুঝানোর চেষ্টা করছি-