বিহিত মুদ্রা ও ঐচ্ছিক মুদ্রার মধ্যে পার্থক্য

বিহিত মুদ্রা (Legal Tender):

যে অর্থ-সরকারি আইন দ্বারা পরিচালিত এবং লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে জনগ্ণ গ্রহণ করতে আইনগত বাধ্য তাকে বিহিত মুদ্রা বলে। অন্যভাবে বলা যায়, সরকারের পক্ষে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক ইস্যুকৃত নোট ও মুদ্রাকেই বিহিত মুদ্রা বলা হয়। অর্থাৎ বিহিত মুদ্রা কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক প্রচলিত মুদ্রা। বিহিত মুদ্রা সরকারে আইনের আওতায় পরিচালিত। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ছাড়া 5 টাকা 10 টাকা 20 টাকা 50 টাকা 100 টাকা 200 টাকা 500 টাকা 1000 টাকার নোট প্রত্যেকটি বিহিত মুদ্যা। বিহিত মুদ্রা বাংলাদেশ ব্যাংক কতৃক ছাড়া হয়ে থাকে। বিহিত মুদ্রা শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বে অবস্থিত। সকল দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কতৃক যে সকল মুদ্রা ছাড়া হয়, সেগুলোই বিহিত মুদ্রা।

ঐচ্ছিক মুদ্রা (Optional Money):

যে মুদ্রা গ্রহণ করার আইনগত কোন বাধ্য বাধকতা নেই বরং তা গ্রহণ করা গ্রহীতার ইচ্ছা অনিচ্ছার উপর নির্ভর করে তাকে ঐচ্ছিক মুদ্রা বলে। যেমন−চেক, ড্রাফ্ট, পে-অর্ডার, হুন্ডি, ট্রেজারী বিল ইত্যাদি। অন্যভাবে বলা যায়, এমন কিছু মুদ্রা আছে যে গুলো মানুষ লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে গ্রহন করতে আইনগত বাধ্য নয়। তবে ইচ্ছা করলে এই ধরনের মুদ্রা লেনদেনের কাজে ব্যবহার করতে পারে।

বিহিত মুদ্রা ও ঐচ্ছিক মুদ্রার মধ্যে পার্থক্যঃ

বিহিত মুদ্রা ও ঐচ্ছিক মুদ্রার দুটি বিনিময়ের মাধ্য হলেও। তাদের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান রয়েছে। বিহিত মুদ্রা ও ঐচ্ছিক মুদ্রার মধ্যে পার্থক্য নিচে আলোচনা করা হয়েছে-

১যে অর্থ সরকারের আইন দ্বারা স্বীকৃত এবং লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে সর্ব সাধারণ গ্রহণ করতে বাধ্য তাকে বিহিত মুদ্রা বলে। অন্যদিকে, যে অর্থ লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করতে আইনত কেউ বাধ্য নয়, তবে প্রয়ােজনে লেনদেন কার্যে সহায়তা করে তাকে ঐচ্ছিক অর্থ বলে।

২। বিহিত মুদ্রা দেশের আইন দ্বারা স্বীকৃত। অন্যদিকে, ঐচ্ছিক অর্থের আইনগত স্বীকৃতি নেই।

৩। কেন্দ্রিয় ব্যাংক দেশে বিহিত মুদ্রা প্রচলন ও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। অন্যদিকে, বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ঐচ্ছিক অর্থ প্রচলন করে থাকে।

৪। বিহিত অর্থ বিনিময় হিসেবে মাধ্যম সর্বজন স্বীকৃত। অন্যদিকে, ঐচ্ছিক মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত নয়।

৫। বিহিত অর্থ হল -১টাকা, ২টাকা সহ সকল কাগজি নােট ও বিভিন্ন প্রকার ধাতব মুদ্রা। অন্যদিকে, ঐচ্ছিক মুদ্রা হল ব্যাংকের চেক, প্রাইজ বন্ড ইত্যাদি।

৬। বিহিত অর্থ গ্রহণযােগ্যতার ক্ষেত্রে কোন শর্ত পূরণের প্রয়ােজন হয় না। অন্যদিকে, ঐচ্ছি অর্থের ব্যবহার শর্ত/ সাপেক্ষে গ্রহণযােগ্য।

৭। বিহিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভাজন যােগ্যতা আছে। অন্যদিকে, ঐচ্ছিক অর্থের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভাজন যােগ্যতা নেই।