মোনাডনক ও ইনসেলবার্জ এর মধ্যে পার্থক্য

মোনাডনক (Monadnock):

আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ারের অন্তর্গত মাউন্ড মোনাডনকের নাম অনুসারে সমপ্রায়ভূমি ওপর গঠিত অনুচ্চ টিলা গুলির নামকরন করা হয়েছে মোনাডনাক। সমপ্রায়ভূমির মধ্যস্থিত অবশিষ্ট পাহাড়কে মোনাডনক বলা হয়। মোনাডনকে মেঘালয়ে দেখা যায়। উদাহরণ: বিহারে, ছোটনাগপুর মালভূমির কোন কোন অংশ সমপ্রায় ভূমি এবং এদের মধ্যে পরেশনাথ পাহাড়, পাঞ্চেৎ পাহাড় মোনাডনাক।

ইনসেলবার্জ (Inselberg):

যুগ যুগ ধরে ক্ষয় পেয়ে এইসব পর্বতগাত্রের ঢাল খুব বেশি, পর্বতগাত্র মসৃণ এবং দেখতে গোলাকার হয় । গোলাকৃতি এইপ্রকার অনুচ্চ টিলাকে ইনসেলবার্জ (Inselberg) বলে । ‘Inselberg’ একটি জার্মান শব্দ, যার অর্থ “দ্বীপ শিলা”। ১৯২৬ সালে পাসার্জ সমতল মরুভূমির মাঝে ক্ষয়প্রাপ্ত অবশিষ্ট ভূমিরুপের নাম দেন ইনসেলবার্জ । বেলেপাথর এবং গ্রানাইট, নিস বা কংগ্লোমারেট দ্বারা গঠিত মরু অঞ্চলে বায়ুর অবঘর্ষ ও অপসারণ প্রক্রিয়ায় ক্ষয়কার্যের ফলে ক্ষয়চক্রের বার্ধক্য পর্যায়ে কোমল বেলেপাথর ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে পেডিমেন্ট বা মরু সমভূমি তে পরিণত হয় এবং অপেক্ষাকৃত কঠিন গ্রানাইট, নিস বা কংগ্লোমারেট দ্বারা গঠিত অংশগুলি ক্ষয় প্রতিরোধ করে ওই মরু সমভূমির উপর বিচ্ছিন্ন দ্বীপের ন্যায় অবশিষ্ট পর্বত বা ইনসেলবার্জ রূপে অবস্থান করে। উদাঃ কালাহারি মরুভূমিতে অনেক ইনসেলবার্জ দেখা যায় ।

মোনাডনক ও ইনসেলবার্জ এর মধ্যে পার্থক্য:

যুগ যুগ ধরে ক্ষয় পেয়ে এইসব পর্বতগাত্রের ঢাল খুব বেশি, পর্বতগাত্র মসৃণ এবং দেখতে গোলাকার হয়। মোনাডনক ও ইনসেলবার্জ এর মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। মোনাডনক স্বাভাবিক ক্ষয়চক্রের বার্ধক্য অবস্থায় গঠিত ভূমিরূপ। অন্যদিকে মরু ক্ষয়চক্রের বার্ধক্য অবস্থায় গঠিত ভূমিরূপ।

২। সমপ্রায়ভূমির ওপর কঠিন শিলাগুলি ক্ষয়কাজ প্রতিরোধ করে মোনাডনক গঠন করে। অন্যদিকে গ্রানাইট, নিস প্রভৃতি কঠিন শিলা দ্বারা ইনসেলবার্জ গঠিত হয়।

৩। প্রায় বৈচিত্র্যহীন সমপ্রায় ভূমির উপর মোনাডনক গুলির বৈচিত্র্যের স্মারক রূপে দন্ডায়মান থাকে। অন্যদিকে, ইনসেলবার্জের পাশ্বদেশ খাঁড়া ঢালযুক্ত ও শিখর দেশ গোলীয় বা সমতল প্রকৃতির হয়।

৪। মোনাডনক এর উদাহরণ: বিহারে, ছোটনাগপুর মালভূমির কোন কোন অংশ সমপ্রায় ভূমি এবং এদের মধ্যে পরেশনাথ পাহাড়, পাঞ্চেৎ পাহাড় মোনাডনাক। অন্যদিকে, ইনসেলবার্জ এর উদাঃ কালাহারি মরুভূমিতে অনেক ইনসেলবার্জ দেখা যায় ।