সিরিজ ও সমান্তরাল বর্তনীর মধ্যে পার্থক্য

সিরিজ বর্তনী (Series Circuit) :
যে বর্তনীতে রোধ, তড়িৎ যন্ত্র বা উপকরণসমূহ একটির পর একটি পর্যায়ক্রমে সাজানো থাকে তাকে সিরিজ বর্তনী বলে। অর্থাৎ যে বর্তনীতে তড়িৎযন্ত্রসমূহ (Component) একটার এক প্রান্তের সাথে অপরটির এক প্রান্ত সংযুক্ত হয়ে বর্তনী গঠিত হয় তাকে সিরিজ বর্তনী বা শ্রেণিসংযোগ বর্তনী বলে। একটি উপাদানের এক প্রান্ত থেকে পরবর্তী উপাদানের এক প্রান্ত সংযুক্ত থাকে। সিরিজ বর্তনীতে সবগুলো উপাদানের মধ্য দিয়ে একই পরিমাণ তড়িৎ প্রবাহ প্রবাহিত হয়।

সিরিজ বর্তনীর ক্ষেত্রে যেকোনো একটি উপাদান নষ্ট হলে বা বিচ্ছিন্ন হলে পুরো বর্তনী কাজ করবে না। সিরিজ বর্তনীতে একটা সুইচ ব্যবহার করা হয়। যেমন- বিয়ে বাড়িতে একটা সুইচ দিয়ে সবগুলো ছোটো লাইট অন করা যায়।

সমান্তরাল বর্তনী (Parallel Circuit) :
যে বর্তনীতে রোধ, তড়িৎ যন্ত্র বা উপকরণসমূহের সব কয়টির এক প্রান্ত একটি সাধারণ বিন্দুতে এবং অপর প্রান্তগুলো অপর একটি সাধারণ বিন্দুতে সংযুক্ত থাকে, তাকে সমান্তরাল বর্তনী বলে। সমান্তরাল বর্তনীতে তড়িৎ উপাদানগুলো এমনভাবে সংযুক্ত থাকে যে, প্রত্যেকটি উপাদানের এক প্রান্ত একটি সাধারণ বিন্দুতে এবং অন্য প্রান্ত অন্য একটি সাধারণ বিন্দুতে সংযুক্ত থাকে। সমান্তরাল বর্তনীতে প্রত্যেকটি উপাদানের মধ্য দিয়ে একই ভোল্টেজ প্রয়োগ করা হয়।

সমান্তরাল বর্তনীর ক্ষেত্রে যেকোনো একটি উপাদান নষ্ট হলে বা বিচ্ছিন্ন হলেও পুরো বর্তনী কাজ করবে। সমান্তরাল বর্তনীতে আলাদা আলাদা সুইচ ব্যবহার হয়। যেমন- বাসা বাড়িতে লাইট,ফ্যান, ফ্রিজ ইত্যাদিতে আলাদা আলাদা সুইচ দিয়ে এগুলো অন করা হয়।

সিরিজ ও সমান্তরাল বর্তনীর মধ্যে পার্থক্যঃ
একটির শেষ প্রান্তের সাথে অপরটির প্রথম প্রান্ত যুক্ত থাকে তখন তাকে সিরিজ বর্তনী বলে। সিরিজ ও সমান্তরাল বর্তনীর মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। যে বর্তনীতে রোধ, তড়িৎ যন্ত্র বা উপকরণসমূহ একটির পর একটি পর্যায়ক্রমে সাজানো থাকে তাকে সিরিজ বর্তনী বলে। অন্যদিকে, যে বর্তনীতে রোধ, তড়িৎ যন্ত্র বা উপকরণসমূহের সব কয়টির এক প্রান্ত একটি সাধারণ বিন্দুতে এবং অপর প্রান্তগুলো অপর একটি সাধারণ বিন্দুতে সংযুক্ত থাকে, তাকে সমান্তরাল বর্তনী বলে।

২। সিরিজ বর্তনীতে উপকরণসমূহের মধ্য দিয়ে একই পরিমাণ তড়িৎ প্রবাহিত হয়। অন্যদিকে, সমান্তরাল বর্তনীতে উপকরণসমূহের মধ্য দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তড়িৎ প্রবাহ চলে।

৩। সিরিজ বর্তনীতে বিভিন্ন রোধের প্রান্তবিন্দু বিভিন্ন স্থানে সংযুক্ত থাকে। অন্যদিকে, সমান্তরালে সবকটির প্রান্তবিন্দু একটি নির্দিষ্ট জায়গায় মিলিত হয়।

৪। গৃহে বিদ্যুতায়নের জন্যে সিরিজ বর্তনী উপযোগী নয়। অন্যদিকে,গৃহে বিদ্যুতায়নের জন্যে সমান্তরাল বর্তনী অধিক সুবিধাজনক।

৫। কোনোরূপ বদল না আনলে সিরিজ বর্তনীতে তড়িৎ প্রবাহ অপরিবর্তিত থাকে। অন্যদিকে, সমান্তরালে বিভব পার্থক্যের মানের কোনোরূপ পরিবর্তন হয় না।

৬। সিরিজ বর্তনীতে একটা সুইচ ব্যবহার করা হয়। যেমন- বিয়ে বাড়িতে একটা সুইচ দিয়ে সবগুলো ছোটো লাইট অন করা যায়। অন্যদিকে, সমান্তরাল বর্তনীতে আলাদা আলাদা সুইচ ব্যবহার হয়। যেমন- বাসা বাড়িতে লাইট,ফ্যান, ফ্রিজ ইত্যাদিতে আলাদা আলাদা সুইচ দিয়ে এগুলো অন করা হয়।