স্বয়ম্ভূত ও প্ররোচিত ভোগের মধ্যে পার্থক্য

স্বয়ম্ভূত ভোগ (Autonomous Consumption) :
যে ভোগ আয়ের পরিবর্তন দ্বারা প্রভাবিত হয় না, তাকে স্বয়ম্ভূত ভোগ বলে। অথবা, শূন্য আয়েও যে নির্দিষ্ট পরিমাণ ভোগব্যয় বজায় থাকে, তাকে স্বয়ম্ভূত ভোগ বা আয়নিরপেক্ষ ভোগ বলে। মানুষ উপার্জন করার পূর্বে, বেঁচে থাকার জন্য যে পরিমাণ ভোগ করে তাই স্বয়ম্ভূত ভোগ। এ ভোগ শুধুস্বল্পকালেই বিদ্যমান থাকে। এ ভোগকে ‘ঋণজাত ভোগ’ও বলা হয়।

প্ররোচিত ভোগ (Induced Consumption) :
যে ভোগ আয়ের উপর নির্ভর করে না এবং আয়ের প্রতিটি স্তরে যে ভোগ সমান বা স্থির থাকে, তাকে বলা হয় প্ররোচিত ভোগ। অর্থাৎ আয়ের পরিবর্তন দ্বারা যে ভোগ প্রভাবিত হয়, তাকে প্ররোচিত ভোগ বলে। এক্ষেত্রে আয় বাড়লে বা কমলে ভোগ ব্যয়ও যথাক্রমে বাড়ে এবং কমে। দীর্ঘকালে স্বয়ম্ভূত ভোগ থাকে না তখন সবই প্ররোচিত ভোগ। তাই এ রেখা মূলবিন্দু থেকে ওঠে এবং ডান দিকে ঊর্ধ্বগামী, কোনো ছেদক নেই এবং ৪৫ ডিগ্রি রেখার নিচে অবস্থান করে।

স্বয়ম্ভূত ও প্ররোচিত ভোগের মধ্যে পার্থক্যঃ
মানুষ উপার্জন করার পূর্বে, বেঁচে থাকার জন্য যে পরিমাণ ভোগ করে তাই স্বয়ম্ভূত ভোগ। স্বয়ম্ভূত ও প্ররোচিত ভোগের মধ্যে পার্থক্য নিচে দেখানো হয়েছে-

১। যে ভোগ আয়ের পরিবর্তন দ্বারা প্রভাবিত হয় না, তাকে স্বয়ম্ভূত ভোগ বলে। অন্যদিকে, যে ভোগ আয়ের উপর নির্ভর করে না এবং আয়ের প্রতিটি স্তরে যে ভোগ সমান বা স্থির থাকে, তাকে বলা হয় প্ররোচিত ভোগ।

২। স্বয়ম্ভূত ভোগ আয়ের ওপর নির্ভরশীল নয়। অন্যদিকে, প্ররোচিত ভোগ ব্যয় আয়ের ওপর নির্ভরশীল।

৩। শূন্য আয়ে স্বয়ম্ভূত ভোগশূন্য হয় না। অন্যদিকে, ধনাত্মক হলেও শূন্য আয়ে প্ররোচিত ভোগশূন্য হয়।

৪। স্বয়ম্ভূত ভোগ রেখা ভূমি অক্ষের সমান্তরাল। অন্যদিকে, প্ররোচিত ভোগ রেখা মূল বিন্দু হতে ডান দিকে ঊর্ধ্বগামী।

৫। স্বল্পমেয়াদি ভোগ অপেক্ষকে স্বয়ম্ভূত ও প্ররোচিত উভয় ভোগই বিদ্যমান থাকলেও দীর্ঘকালীন ভোগ অপেক্ষকে শুধু
প্ররোচিত ভোগই থাকে।

৬। স্বয়ম্ভূত ভোগের ক্ষেত্রে আয় ও ভোগের পরিবর্তনের অনুপাত বা ঢাল (ΔC/ΔY= ০) শূন্য হলেও প্ররোচিত ভোগের ক্ষেত্রে এ অনুপাত বা ঢাল (ΔC/ΔY>০) ধনাত্মক হয়।