আবরণী কলা ও যোজক কলার মধ্যে পার্থক্য

আবরণী কলা (Epithelial Tissue):

আবরণী কলা হল প্রাণী কলার চার ধরনের মৌলিক কলার একটি এবং সেই সাথে যোজক কলা, পেশী কলা এবং স্নায়বিক কলার অংশ। আবরণী কলাগুলি সারা শরীর জুড়ে অঙ্গ এবং রক্তনালীর বাহিরের দিকে এবং সেইসাথে ভেতরের দিকের অঙ্গগুলির গহব্বরের ভেতরের দিকে পথ হিসাবে কাজ করে। আবরণী কলা হল প্রাণী কলার চার ধরনের মৌলিক কলার একটি এবং সেই সাথে যোজক কলা, পেশী কলা এবং স্নায়বিক কলার অংশ। আবরণী কলাগুলি সারা শরীর জুড়ে অঙ্গ এবং রক্তনালীর বাহিরের দিকে এবং সেইসাথে ভেতরের দিকের অঙ্গগুলির গহব্বরের ভেতরের দিকে আবরণী বা আচ্ছাদন হিসাবে কাজ করে। উদাহরণস্বরূপ এপিডার্মিস, ত্বকের বাইরেরতম স্তর।

আবরণী কোষের তিনটি প্রধান অংশ রয়েছে। সেগুলো হলো শল্কাকার, স্তম্ভাকার এবং ঘনকাকার। এগুলি কোষের একক স্তরে সাধারণ আবরণ হিসাবে কাজ করে। কিছু কলাতে নিউক্লিয়াস থাকার কারণে স্তম্ভাকার কোষের একটি স্তর স্তরীভূত হতে পারে। এই ধরনের কলাকে ছদ্ম-স্তরীভূত বলা হয়। এই কোষগুলোর সমস্ত গ্রন্থি আবরণী কোষ দ্বারা গঠিত। আবরণী কোষগুলির কাজ হলো স্রাব, শোষণ, সুরক্ষা, আন্তঃকোষীয় পরিবহন এবং সংবেদন।

যোজক কলা (Connective tissue):

যোজক কলা এক ধরনের আঁশবহুল কলা, যেটি মানবদেহের অন্যান্য অঙ্গ অথবা কলাকে সমর্থন করে, যুক্ত করে অথবা বিচ্ছিন্ন করে । এটি চার ধরনের কোষকলার একটি (অপর তিনটি হচ্ছে আবরণী, পেশি ও স্নায়ুকলা)। যোজক কলা ফাইব্রোব্লাস্ট, এডিপোসাইট, ম্যাক্রোফেজ, মাস্ট কোষ এবং লিউকোসাইড নিয়ে গঠিত। ১৮৩০ সালে জোসেফ পিটার মুলার “যোজক কলা” শব্দটি (জার্মান ভাষায়, বিন্দেগিউবে) প্রস্তাব করেন। ১৮ শতকেই যোজক কলা স্বতন্ত্র্য শ্রেণি হিসেবে বিবেচিত হত। প্রাণীদের যোজক কলার মূল উপাদান কোলাজেন ও স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে এটির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, যা প্রায় ২৫%।

আবরণী কলা ও যোজক কলার মধ্যে পার্থক্যঃ

আবরণী কোষের তিনটি প্রধান অংশ রয়েছে। সেগুলো হলো শল্কাকার, স্তম্ভাকার এবং ঘনকাকার। আবরণী কলা ও যোজক কলার মধ্যে পার্থক্য নিচে আলোচনা করা হয়েছে-

১। প্রাণীদেহের বাইরের এবং ভেতরের বিভিন্ন অঙ্গের বহিঃতলকে আবৃত করে রাখে আবরণী কলা। অন্যদিকে, যোজক কলার প্রাণীদেহের বিভিন্ন অঙ্গ অথবা একই অঙ্গের বিভিন্ন অংশকে সংযুক্তকারী এই কলা কঙ্কাল গঠন করে দেহ কাঠামো প্রদান করে, বিভিন্ন পদার্থ পরিবহণে অংশ নেয়, ক্ষতিকারক পদার্থ ও জীবাণু থেকে রক্ষা করে, ক্ষত নিরাময়ে অংশগ্রহণ করে এমন কি দেহস্থ তাপও নিয়ন্ত্রণ করে।

২। আবরণী কলার কোষগুলি ঘনভাবে ভিত্তি পর্দার উপর বিন্যস্ত থাকায় আন্তঃকোষীয় পদার্থের পরিমাণ কম থাকে এবং এতে কোন রক্ত বাহিকা থাকে না। অন্যদিকে, যোজক কলার ভ্রূণীয় মেসোডার্ম থেকে উৎপত্তি লাভকারী এ কলার কোষের সংখ্যা কম এবং কোষগুলো নির্দিষ্ট স্তরে বিন্যস্ত না থেকে মাতৃকা বা ধাত্র বা ম্যট্রিক্সের মধ্যে ছড়িয়ে থাকে তবে এতে রক্ত বাহিকা উপস্থিত।

৩। আবরণী কলা দেহের অন্যান্য কলাকে সুরক্ষা প্রদান এবং ক্ষরণ রেচন ও শোষণে সাহায্য করা ছাড়াও এরা অনেক সময় উদ্দীপনা গ্রহণের কাজ করে থাকে। অন্যদিকে, প্রাণীদের যোজক কলার মূল উপাদান কোলাজেন ও স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে এটির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি

৪। আবরণী কোষের তিনটি প্রধান অংশ রয়েছে। সেগুলো হলো শল্কাকার, স্তম্ভাকার এবং ঘনকাকার। অন্যদিকে, গঠন প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে যোজক কলাকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- প্রকৃত যোজক কলা (Proper Connective Tissue), কঙ্কাল যোজক কলা (Skeletal Connective Tissue) এবং তরল যোজন কলা (Fluid Connective Tissue)।