পদ্য ও গদ্যের মধ্যে পার্থক্য

পদ্য ও গদ্যের হলো সাহিত্যের দুটি প্রধান রূপ। গদ্য এবং পদ্যের মধ্যে কিছু প্রধান পার্থক্য রয়েছে। নিচে পদ্য ও গদ্যের মধ্যে পার্থক্য দেখানো হয়েছে-

পদ্য ও গদ্যের মধ্যে পার্থক্য :
১। মনের ভাবনা কল্পনা অনুভূতি রঞ্জিত হয়ে যথাযথ শব্দসম্ভারে বাস্তব সুষমামণ্ডিত চিত্রাত্মক ও ছন্দময় রূপ হল কবিতা বা পদ্য, ফলে পদ্যরূপের পদ-বিন্যাস, শব্দ-প্রয়োগ, ক্রিয়ার ব্যবহার গদ্যরূপের মতো নয়। কেননা গদ্য হল মানুষের ভাবনা-চিন্তার সুনিয়ন্ত্রিত, সুনির্বাচিত বুদ্ধিনিষ্ঠ প্রকাশ।

২। ত্রিপদী ছন্দে লেখা উদ্ধৃত কবিতাংশটির ভাষা বৈশিষ্ট্যের দিকে লক্ষ করলে দেখা যায় এর মধ্যে রাঢ়ি ও বঙ্গালি উপভাষা বৈশিষ্ট্যের প্রবণতা রয়েছে। যেমন—বসি > বইস / বৈস, রহিয়া > রয়্যা, বসিয়া > বৈস্যা। অন্যদিকে, গদ্যরূপটি রাঢ়ি উপভাষা ও কিছুটা বঙ্গালি উপভাষা থেকে গড়ে ওঠা আদর্শ লেখ্য গদ্য। স্বতন্ত্র উপভাষায় আমরা কথা বলি কিন্তু আদর্শ গদ্য ভাষায় আমরা লিখি।

৩। পদ্যের ক্ষেত্রে বাক্যের সাধারণ বিন্যাসক্রম বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রক্ষিত হয় না। অন্যদিকে, গদ্যের ক্ষেত্রে বাক্যের বিন্যাসক্রম রক্ষিত হয়।

৪। পদ্যের ভাষা ছন্দবদ্ধ কাব্যভাষা। অন্যদিকে, গদ্যের ক্ষেত্রে ছন্দের অনুশাসন নেই।

৫। পদ্যে সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রণ লক্ষিত হয়। অন্যদিকে, গদ্যের ক্ষেত্রে সাধু ও চলিত রীতির মিশ্রণ বর্জন করা হয়েছে।

৬। ছন্দ কবিতায় অন্ত্যমিল থাকে। অন্যদিকে, গদ্যে অন্ত্যমিল থাকে না।