ওয়াটার প্রুফ এবং ওয়াটার রেজিস্ট্যান্সের মধ্যে পার্থক্য

ওয়াটার প্রুফ (Water Proof)
বর্তমানে সব ধরনের স্মার্ট গ্যাজেটগুলোই কোম্পানি ওয়াটারপ্রুফ করে তৈরি করছে। সঙ্গে থাকছে ধুলা ময়লা ও ঘাম থেকে রক্ষা করার রেটিং। আপনার স্মার্টফোনটি ওয়াটারপ্রুফ কি না তা জানেন কি? খুব সহজেই আইপি রেটিংয় দেখে বুঝে নিতে পারবেন স্মার্টফোনটি কতখানি ওয়াটারপ্রুফ।

স্মার্টফোন কেনার সময় স্মার্টফোনের স্পেক শিটসের প্রসঙ্গে আইপি রেটিংয়ের কথা শুনেছেন অনেকে। সাধারণত আইপি রেটিংয়ের অর্থ আমাদের স্মার্টফোন ধুলাময়লা এবং পানি থেকে কতটা সুরক্ষিত তা বোঝানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের আইপি রেটিং রয়েছে এবং এই কথাও মনে রাখা প্রয়োজন আইপি রয়েছে মানেই আমাদের ফোন সুরক্ষিত এমনটা কিন্তু নয়। আইপি রেটিয়ের সম্পূর্ণ অর্থ ‘ইংগ্রেস প্রোটেকশন’। এটি এক ধরনের পরিমাপ পদ্ধতি সেটি গ্রাহকদের নিশ্চয়তা প্রদান করে যে তাদের স্মার্টফোনে ব্যবহৃত বিভিন্ন ইলেকট্রিক্যাল জিনিস ধুলাময়লা বা পানি থেকে কতটা সুরক্ষিতভাবে আচ্ছাদিত রয়েছে। তবে ওয়াটারপ্রুফ মানেই যে সমুদ্রের পানি, চা-কফি থেকে রক্ষা করবে তা কিন্তু নয়।

আইপি রেটিংয়ে সাধারণত দুটি ডিজিট থাকে যেমন, 68, X8, 67, 66। এগুলঘকে পড়তে হয় খানিকটা এভাবে, IP 6 and 8 or IP X এবং 8। কোনও মতেই শুধুমাত্র 68 বা 67 নয়। এর মধ্যে প্রথম ডিজিটটি ধুলাবালি থেকে সুরক্ষিত রাখতে ব্যবহৃত হয়, এটির স্কোর ০ থেকে ৬। ‘৬’-এর অর্থ ফোনটি সম্পূর্ণভাবে ধুলা থেকে সুরক্ষিত, যদি স্কোর ‘০’ হয় তবে এটিকে ‘X’ দ্বারা প্রতীকায়িত করা হয়। সাধারণত অধিকাংশ ফোনই ৫ থেকে ৬ স্কোরের মধ্যেই অবস্থান করে। দ্বিতীয় ডিজিটটি পানি থেকে কতটা সুরক্ষিত তা বোঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। এর রেটিং স্কেল ০ থেকে ৮। ৮ রেটিং যুক্ত স্মার্টফোন প্রায় ১ মিটার গভীর পানিতে ৩০ মিনিট পর্যন্ত থাকতে পারে।

ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স (Water Resistant)
ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স হল তিনটির জল সুরক্ষার সর্বনিম্ন স্তর। যদি কোনও ডিভাইসকে ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স হিসাবে লেবেল করা হয় তবে এর অর্থ হল যে ডিভাইসটির নির্মাণের ফলে এটির ভিতরে জল প্রবেশ করা আরও কঠিন করে তোলে বা সম্ভবত এটি একটি খুব হালকা পদার্থ দিয়ে প্রলেপিত যা ডিভাইসের পানির মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনাকে উন্নত করতে সহায়তা করে। ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স গুণাবলী ঘড়ির মতো পণ্যগুলির জন্য দুর্দান্ত কারণ তারা সেই পণ্যগুলিকে হালকা বৃষ্টি বা আপনার হাত ধোয়া সহ্য করতে সহায়তা করে।

ওয়াটারপ্রুফ এবং ওয়াটার রেজিস্ট্যান্সের মধ্যে পার্থক্যঃ

নতুন স্মার্টফোন কেনার পর সেটির ব্যবহার নির্দেশিকায় ‘ওয়াটারপ্রুফ’ বা ‘ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স’ কথাটি লেখা থাকে। কখনো আবার নির্দেশিকায় লেখা না থাকলেও বিক্রেতারা এ সুবিধার কথা উল্লেখ করেন। তবে বেশির ভাগ ক্রেতাই এই দুটি আলাদা শব্দকে একই ভেবে থাকেন। শব্দ দুটির মাধ্যমে পানিরোধী–সুবিধা বোঝানো হলেও মৌলিক কিছু পার্থক্য রয়েছে। তা নিম্নরূপ-

১. স্মার্টফোনে ওয়াটারপ্রুফ সক্ষমতা থাকলে তুলনামূলক বেশি সময় পানিতে ঝুঁকি ছাড়া থাকতে পারে। তবে নির্দিষ্ট সময় পর পানির কারণে ফোনের ক্ষতি হতে পারে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ফোন সঙ্গে নিয়ে সাঁতার কাটা বা স্কুবা ডাইভিং করা যায়। তবে মনে রাখতে হবে, কোনো ফোন বা ইলেকট্রনিক যন্ত্রই দীর্ঘ সময় পানির নিচে ব্যবহার করা যায় না।

অন্যদিকে, ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স লেবেল যুক্ত থাকলে বুঝতে হবে বৃষ্টির পানি বা পানির ঝাপটা লাগলে ফোনের ক্ষতি হবে না। তবে সাঁতার কাটলে বা স্কুবা ডাইভিং করলে ক্ষতি হবে।

২. ফোন ওয়াটারপ্রুফ বা ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স কি না, তা জানার উপায় রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ইলেকট্রোটেকনিক্যাল কমিশনের নির্ধারিত আইপি রেটিং দেখে সহজেই ফোন কতটা পানি, ময়লা, ধুলাবালু নিরোধক, তা জানা যায়। এর জন্য আইপি ৬৭ এবং আইপি ৬৮ এই দুইটি রেটিং রয়েছে। এ রেটিংয়ের প্রথম সংখ্যা দেখে ধুলাবালু নিরোধক মান এবং দ্বিতীয় সংখ্যা দিয়ে পানিরোধক মান জানা যায়। ধুলাবালু রোধের জন্য সর্বোচ্চ মান ৬ এবং পানিরোধের সর্বোচ্চ মান ৮। আইপি ৬৮ মানের ফোনগুলো সাধারণত ওয়াটারপ্রুফ হয়ে থাকে। এটি পানির ৩০ মিটার গভীরে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত থাকতে পারে।

অন্যদিকে, আইপি ৬৭ মানের ফোনকে ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। এগুলো সাধারণত পানির ১ মিটার গভীরে ৩০ মিনিট পর্যন্ত থাকতে পারে।

৩. দুইটাই পানিরোধী তবে Water Resistant একটু কম সময় রোধ করতে পারে। অন্যদিকে, Water Proof তুলনামুলক বেশি সময় পানি রোধ করতে পারে।