এয়ার ও অয়েল সার্কিট ব্রেকার এর মধ্যে পার্থক্য

এয়ার সার্কিট ব্রেকার (Air circuit breaker):

যে সার্কিট ব্রেকারে আর্ক নির্বাপণ এবং অপারেটিং স্বাভাবিক বায়ু মণ্ডলের বাতাসের চাপে করা হয় তাকে এয়ার সার্কিট ব্রেকার বলে। এয়ার সার্কিট ব্রেকারে এয়ার চাপের মাধ্যমে সার্কিট ব্রেকারের অপারেশন ঘটে বলে এরূপ নামকরণ করা হয়েছে। ইহার ক্যাপাসিটি কম এবং বর্তমানে ব্যবহার সীমিত। জেনারেটরের KVA অনুযায়ী এই ব্রেকার নির্ধারিত হয়। সাধারণত 1887 KVA এর জন্য 2500 ampere ব্রেকার লাগানো হয় কন্ট্রোল পানেলে। এটি জেনারেটর এবং পাওয়ার সিস্টেম কে সুরক্ষা রাখে।

এয়ার সার্কিট ব্রেকার কাজের নীতি অন্যান্য ধরণের সিবি-র তুলনায় আলাদা। আমরা জানি যে সিবি-এর প্রাথমিক কাজটি যেখানেই পরিচিতিগুলির মধ্যে ব্যবস্থার ফলে সিস্টেমের পুনরুদ্ধারের ভোল্টেজকে প্রতিহত করবে যেখানেই আর্কিং পুনরুদ্ধার বন্ধ করা।
এয়ার সার্কিট ব্রেকারও একই কাজ করে তবে অন্যভাবে। একটি চাপকে বাধা দেওয়ার সময়, ভোল্টেজ সরবরাহের জায়গায় এটি একটি চাপকে ভোল্টেজ তৈরি করে। এই ভোল্টেজটি সর্বনিম্ন ভোল্টেজ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে যা চাপটি বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয়। একটি সার্কিট ব্রেকার দ্বারা ভোল্টেজ সরবরাহটি তিনটি বিভিন্ন উপায়ে বাড়ানো যেতে পারে।

অয়েল সার্কিট ব্রেকার (Oil circuit breaker):

যে সার্কিট ব্রেকারের মধ্যে তেল থাকে এবং এর অপারেশন বা অন-অফ ইনসুলেশন অয়েলের মধ্যে হয়ে থাকে, তাকে অয়েল সার্কিট ব্রেকার (Oil circuit breaker) বলে। অয়েল সার্কিট ব্রেকারে ব্যবহৃত অয়েল ইনসুলেশন এর কাজ করে ও আর্ক নিভায়। এ ধরনের সার্কিট ব্রেকারের ক্যাপাসিটি বা এম ভি এ রেটিং বেশি হয়। অয়েল সার্কিট ব্রেকারে ব্যবহৃত তেলের পরিমাণের উপর নির্ভর করে একে দুভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

১. মিনিমাম বা স্মল বা লো অয়েল সার্কিট ব্রেকার এবং
২. বাল্ক অয়েল সার্কিট ব্রেকার

এয়ার ও অয়েল সার্কিট ব্রেকার এর মধ্যে পার্থক্যঃ

এয়ার সার্কিট ব্রেকার ও অয়েল সার্কিট ব্রেকার এর মধ্যে কিছু মিল থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বৈশিষ্ট্যগত অমিল রয়েছে। এয়ার ও অয়েল সার্কিট ব্রেকার এর মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ-

১। যে সার্কিট ব্রেকারে আর্ক নির্বাপণ এবং অপারেটিং স্বাভাবিক বায়ু মণ্ডলের বাতাসের চাপে করা হয় তাকে এয়ার সার্কিট ব্রেকার বলে। অন্যদিকে, যে সার্কিট ব্রেকারের মধ্যে তেল থাকে এবং এর অপারেশন বা অন-অফ ইনসুলেশন অয়েলের মধ্যে হয়ে থাকে, তাকে অয়েল সার্কিট ব্রেকার বলে।

২। যে সার্কিট ব্রেকারের গঠন জটিল। অন্যদিকে, অয়েল সার্কিট ব্রেকার এর গঠন অপেক্ষাকৃত সহজ সরল।

৩। এয়ার সার্কিট ব্রেকার অপারেশনের জন্য সর্বদা উচ্চ চাপের বায়ু মজুত রাখতে হয়। অন্যদিকে, অয়েল সার্কিট ব্রেকার অপারেশন তেলের মধ্যে সম্পন্ন হয়।

৪। এয়ার সার্কিট ব্রেকার চলমান কন্ট্রাক্টকে খোলা ও বন্ধ এবং আর্ক নিবাপনের জন্য বায়ু ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে, অয়েল সার্কিট ব্রেকার ইন্সুলেশন ও আর্ক নির্বাপণের উদ্দেশ্যে তেল ব্যবহৃত হয়।

৫। এয়ার সার্কিট ব্রেকার কন্টাক্ট গুলো বায়ু মাধ্যমে থাকে। অন্যদিকে, অয়েল সার্কিট ব্রেকার কন্টাক্ট গুলো ইন্সুলেটিং তেলে ডুবানো থাকে।

৬। এয়ার সার্কিট ব্রেকারে আগুন লাগার সম্ভাবনা খুবই কম। অন্যদিকে, অয়েল সার্কিট ব্রেকারের তেলের মাধ্যমে আগুন লাগার সম্ভাবনা থাকে।

৭। এয়ার সার্কিট ব্রেকারে আরকিং পিরিয়ড খুব কম হয়। অন্যদিকে, অয়েল সার্কিট ব্রেকারে আরকিং পিরিয়ড তুলনামূলক ভাবে বেশী।

৮। এয়ার সার্কিট ব্রেকারে আর্ক এনার্জি কম হওয়ায় কন্টাক্ট সমূহ কম ক্ষতি গ্রস্থ হয়। অন্যদিকে, অয়েল সার্কিট ব্রেকারে আর্ক এনার্জি বেশী হওয়ায় কন্টাক্ট সমূহ বেশী ক্ষতি গ্রস্থ হয়।

৯। এয়ার সার্কিট ব্রেকারে কমপ্রেসর থেকে নতুন বায়ু প্রবেশ করে খুব তাড়াতাড়ি ডাই-ইলেকট্রিক শক্তি অর্জন করে। অন্যদিকে, অয়েল সার্কিট ব্রেকার প্রতিবার অপারেশনে নতুন তেল ব্যবহার করা যায় না বলে এত তাড়াতাড়ি ডাই-ইলেকট্রিক শক্তি অর্জন করতে পারে না।

১০। এয়ার সার্কিট ব্রেকারে বেশী ক্যাপাসিটি সম্পন্ন হয় না। অন্যদিকে, অয়েল সার্কিট ব্রেকার বেশী ক্যাপাসিটি ইউনিট তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়।