মস ও ফার্ণ এর মধ্যে পার্থক্য

মস:

ব্রায়োফাইটা নামটি এসেছে দু’টি গ্রিক শব্দ থেকে এসেছে। গ্রিক ব্রায়ন অর্থ মস এবং ফাইটন অর্থ উদ্ভিদ। মস এবং এর সাথে মিল সম্পন্ন উদ্ভিদসমূহ ব্রায়োফাইটা বিভাগের অন্তর্গত। প্রচলিত শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী ব্রায়োফাইটা একটি বিভাগ। মারগুলিস এর শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী ব্রায়োফাইটা একটি গ্রেড এবং ফাইলাম।

এদের অনেক সদস্যই আর্দ্র স্থলজ পরিবেশে জন্মায়। কিন্তু পানির সাহায্য ছাড়া জনন, বৃদ্ধি ও বিকাশ ঘটে না, তাই এরা উভচর উদ্ভিদ। স্থলজ পরিবেশে জন্মালেও এদের জীবন চক্রের একটি বিশেষ ধাপ পানির উপর নির্ভরশীল।

অর্থাৎ এদের যৌন জননের জন্য পানির উপস্থিতি একান্তই প্রয়োজন। জীবন চক্র সম্পন্ন করার সময় এদের শুক্রাণু পানিতে সাঁতার কেটে ডিম্বাণুর নিকট উপস্থিত হয় এবং পানির উপস্থিতিতে নিষেকক্রিয়া সম্পন্ন করে। এরাও জলজ উদ্ভিদের ন্যায় পানি শোষণ করে এবং দেহে জলজ উদ্ভিদের ন্যায় বায়ুরন্ধ্র থাকে। এ কারণে ব্রায়োফাইটকে উভচর উদ্ভিদ বলা হয়ে থাকে।

ফার্ণ:

ফার্ণ হল টেরিডোফাইট প্রজাতির উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম হল Pteris. পুরাতন ভাংগা স্যাতস্যাতে দেয়ালের গায়ে জন্মায়।ইটের স্তুপে এরা ভালো জন্মায়।প্রাচীরের গায়ে জন্মায় বলে এদের সাব এরিয়াল বলা হয়। Pteris উদ্ভিদে সুস্পষ্ট জনুক্রম বিদ্যমান, কারণ এখানে স্পোরোফাইটিক জনুর সাথে গ্যামিটোফাইটিক জনুর অনুক্রমের মাধ্যমে জীবনচক্র সম্পন্ন হয়।

Pteris উদ্ভিদ স্পোরোফাইটিক তথা ডিপ্লয়েড (2n)। এটি হতে উৎপন্ন সোরাস, সোরাসে অবস্থিত স্পোরোন্জিয়াম এবং স্পোরোন্জিয়ামের ক্যাপসিউলের ভেতরে অবস্থিত স্পোর মাতৃকোষও ডিপ্লয়েড।

মস ও ফার্ণ এর মধ্যে পার্থক্য:

ব্রায়োফাইটা নামটি এসেছে দু’টি গ্রিক শব্দ থেকে এসেছে। গ্রিক ব্রায়ন অর্থ মস এবং ফাইটন অর্থ উদ্ভিদ। মস ও ফার্ন এর মধ্যে পার্থক্য নিম্নরুপ-

১। মস বহুকোষী উদ্ভিদ, অপুষ্পক ও অবীজী। ফার্ণ বাধীন, স্বাবলম্বী এবং বীরুৎ প্রকৃতির ।

২। মসের দেহ গ্যামিটোফাইট তথা হ্যাপ্লয়েড অর্থাৎ গ্যামিটোফাইট সর্বদাই স্বতন্ত্র ও স্বভোজী উদ্ভিদ। অন্যদিকে ফার্ণের রেণুধর বা স্পোরোফাইটিক উদ্ভিদ অর্থাৎ ডিপ্লয়েড।

৩। মসের দেহ থ্যালয়েড অর্থাৎ দেহকে সত্যিকার মূল, কান্ড ও পাতায় বিভক্ত করা যায় না। অন্যদিকে ফার্ণ মস জাতীয় উদ্ভিদকে ‘নরম কান্ড ও পাতার’ মতো অংশে চিহ্নিত করা যায়।

৪। মসের মূল নেই, তবে মূলের পরিবর্তে এককোষী রাইজয়েড এবং কোনো কোনো প্রজাতিতে বহুকোষী স্কেল থাকে। অন্যদিকে ফার্ণের দেহকে মূল, কাণ্ড ও পাতাই বিভক্ত করা যায়।

৫। মসের দেহে কোনো ভাস্কুলার টিস্যু নেই অর্থাৎ দেহ প্যারেনকাইমা টিস্যু দিয়ে গঠিত। অন্যদিকে ফার্নের ভাস্কুলার টিস্যু আছে।


বিজ্ঞান সংক্রান্ত আরো পার্থক্য পড়ুনঃ Science

আরোও পার্থক্য পড়ুনঃ  সংকীর্ণ মুদ্রা ও বিস্তৃত মুদ্রার মধ্যে পার্থক্যমোট, গড় ও প্রান্তিক ব্যয়ের মধ্যে পার্থক্যস্বল্পকালীন ও দীর্ঘকালীন উৎপাদন ব্যয়ের মধ্যে পার্থক্যদামের স্থিতিস্থাপকতা এবং চাহিদার আয়ের স্থিতিস্থাপকতার মধ্যে পার্থক্য