ত্বরণ ও মন্দনের মধ্যে পার্থক্য

ত্বরণ (Acceleration):

কোন বস্তু যদি সুষম বেগে না চলে তাহলে বস্তুর বেগের মানের কিংবা দিকের বা উভয়ের পরিবর্তন হতে পারে। বস্তুর বেগের পরিবর্তন হলে আমরা বলি ত্বরণ হচ্ছে। কোন বস্তুর আদিবেগ যদি u হয় এবং t সময় পরে তার শেষ বেগ যদি v হয় তাহলে t সময়ে বেগর পরিবর্তন = v-u
তাহলে, একক সময়ে বেগের পরিবর্তন হবে = (v-u) / t
অতএব ত্বরণ হচ্ছে একক সময়ের বেগের পরিবর্তন হার, অর্থাৎ a = (v-u) / t

সুতরাং ত্বরণ = বেগের পরিবর্তন / সময়
সরল চলমান বস্তুর সময়ের সাথে বেগ বৃদ্ধির হারকে ধনাত্মক ত্বরণ এবং সময়ের সাথে বস্তুর বেগ হ্রাসের হারকে ঋণাত্মক ত্বরন বলা হয় । অনেক সময় ঋণাত্মকক ত্বরণকে মন্দন বলা হয়।

মন্দন (Deceleration):

মন্দন হচ্ছে ত্বরণের ঠিক বিপরীত। অর্থাৎ সময়ের সাথে বস্তুর বেগ হ্রাসের হারকে মন্দন বলে। খাড়া ওপরের দিকে নিক্ষিপ্ত বস্তু সমমন্দনে ওপরের দিকে উঠতে থাকে। একটি বস্তুকে যখন খাড়া ওপরের দিকে নিক্ষেপ করা হয়, তখন বস্তু যতক্ষণ ওপরের দিকে উঠতে থাকে ততক্ষণ ওঠার একই হারে মন্দন হতে থাকে। এ ক্ষেত্রে বস্তুর বেগ প্রতি সেকেন্ডে 9.8 ms-1 কমতে থাকে।

একটি গাড়ি যদি স্থির অবস্থা থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে বেগবান হয়, তাহলে তার ত্বরণ শূন্য থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে একটি মানে পৌঁছায়। গাড়ি যখন তার পূর্ণবেগে পৌঁছায় তখন তার গতি আর বাড়ে না। অর্থাৎ ত্বরণ আবার শূন্য হয়ে যায়। গাড়িটি যদি বেগ কমিয়ে থামতে শুরু করে, তাহলে মন্দন হতে থাকে। গাড়িটি যদি পুরোপুরি থেমে যায়, তাহলে তার বেগ ও ত্বরণ দুটিই শূন্য হয়।

ত্বরণ ও মন্দনের মধ্যে পার্থক্যঃ

ত্বরণ ও মন্দনের মধ্যে কিছুটা সাদৃশ্য থাকলেও এ দুটির মধ্যে বেশিরভাগ বৈশাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। নিচে ত্বরণ ও মন্দনের মধ্যে পার্থক্য দেখানো হয়েছে-

১। সময়ের সাথে বস্তুর বেগ বৃদ্ধির হারকে ত্বরণ বলে। অর্থাৎ বস্তুর বেগের পরিবর্তনকে সময় দিয়ে ভাগ করলে ত্বরণ পাওয়া যায়। অন্যদিকে, মন্দন হচ্ছে ত্বরণের ঠিক বিপরীত। অর্থাৎ সময়ের সাথে বস্তুর বেগ হ্রাসের হারকে মন্দন বলে।

২। কোন গতিশীল বস্তু কণার গতিতে ত্বরণ থাকলে ওর বেগ ক্রমশ বাড়তে থাকে। অন্যদিকে, তিশীল বস্তু কণার গতিতে মন্দন হলে ওর গতিবেগ ক্রমশ কমে যায়।

৩। কোন গতিশীল বস্তুর ত্বরণ সৃষ্টি হলে ওর বেগ একটি নির্দিষ্ট হারে বাড়তে থাকে। অন্যদিকে, মন্দন সৃষ্টি হলে ওর বেগ নির্দিষ্ট হারে কমতে থাকে।

৪। ত্বরণকে ধনাত্মক রাশি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অন্যদিকে, মন্দনকে ঋণাত্মক রাশি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

৫। ত্বরণ হচ্ছে বেগ বৃদ্ধির হার। ত্বরণ 5m/s2 এর মানে হচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে 5m/s হারে বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটাকে ধনাত্মক ত্বরণ বলা হয়। অন্যদিকে, মন্দন হচ্ছে বেগ হ্রাসের হার। মন্দন 5m/s2 এর মানে হচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে 5m/s হারে বেগ হ্রাস পাচ্ছে। এটাকে ঋণাত্মক ত্বরণ বলা হয়।